এক দশক পর মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ এমএসসি-র আসন্ন শিক্ষক নিয়োগের বিধিতে আমূল বদল। সূত্রে খবর, কমিশন স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টের (এসএলএসটি) ওএমআর শিট এবং লিখিত উত্তরপত্রের নথি ১২ বছর অবধি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারা দেশে নানা স্তরের নিয়োগ পরীক্ষার নিরিখে এত বছরের উত্তরপত্র সংরক্ষণ অভিনব বলেই ধারনা শিক্ষাবিদদের।
এরই পাশাপাশি এই প্রথম পরীক্ষায় প্রার্থীরা প্রশ্নের ভুল উত্তর পছন্দ করলে নেগেটিভ মার্কিং রাখারও প্রস্তাব করেছে কমিশন। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, মাদ্রাসার নানা পর্যায়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে প্রার্থী ও আবেদনপত্রের সংখ্যা বিপুল হলে মেন পরীক্ষার আগে প্রিলিমিনারি টেস্টও নিতে চায় কমিশন। তবে সে ক্ষেত্রে মেন পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হবে। টেট ও প্রিলিমিনারির নম্বর চূড়ান্ত মেধাতালিকা তৈরি ও প্রকাশে বিবেচ্য হবে না বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে।
তবে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ১২ বছর নথি সংরক্ষণের প্রস্তাব কেন সে ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের ব্যাখ্যা মেলেনি। তবে বিপুল প্রার্থীর সম্ভাবনাতেই নেগেটিভ মার্কিংয়ের ভাবনা বলে অনুমান করছেন অনেকেই। অনেকে আবার এও মনে করছেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী পদে যাঁদের কর্মচ্যুতি ঘটেছে, তাঁদের মূল ওএমআরের সন্ধান মেলেনি। এসএসসি জানিয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষার প্যানেল প্রকাশের এক বছর পর আগের বিধি মেনে ওএমআর নষ্ট করা হয়েছে। মূল ওএমআর না থাকায় কর্মচ্যুতি কতটা বৈধ, সে প্রশ্ন এখনও বিচারাধীন। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছেন কর্মচ্যুত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। এই প্রেক্ষাপটে নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট ১২ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এই প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, এক দশকের ব্যবধানে মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ১৭২৯টি শূন্যপদে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কয়েক লক্ষ হবে। সে ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর মধ্যে থেকে পৌনে দু’হাজার পদে নিয়োগের জন্য ঝাড়াই-বাছাই কঠিন। সেই কারণেই নতুন সিদ্ধান্ত। মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা এই প্রসঙ্গে জানান, এই নিয়োগবিধি প্রকাশের আগে স্কুলশিক্ষা ও আইন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গেও শলাপরামর্শও করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও পোষিত উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বে থাকা স্কুল সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ এসএসসি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর তিন বছর সংরক্ষণের প্রস্তাব করে স্কুলশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়েছিল। বিকাশ ভবনের কর্তারা তাতে সিলমোহরও দেন। তবে অর্থ দপ্তর তা বাড়িয়ে ১০ বছর করতে বলে। এসএসসিও সেই প্রস্তাব মেনে নেয়।