উত্তাল সমুদ্র। শনিবার থেকে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হবে একটি ঘূর্ণাবর্ত। যা ৭ মে অর্থাৎ রবিবার পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে। এরপর সোমবার, ৮ মে সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর অভিমুখে মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগনোর সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর মঙ্গলবার ৯ মে ওই গভীর নিম্নচাপটি মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। তবে এর গতিপথ কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিম্নচাপে পরিণত হলে গতিপথ সুস্পষ্ট হবে। ঘূর্ণিঝড় কোন অভিমুখে যাবে, তা নিম্নচাপ ঘনীভূত হলেই স্পষ্টভাবে জানাতে পারবেন আবহাওয়াবিদরা, এমনটাই জানানো হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার নাম হবে ‘মোখা’। এই ‘মোখা’ নামটি দেওয়া হয়েছে ইয়েমেনের তরফ থেকে।
বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য। আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের তরফে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে যে, এর প্রভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আর তার জন্য সতর্কতাও জারি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে যে, রবিবার ও সোমবার তুমুল বৃষ্টি হতে পারে এই দুই দ্বীপপুঞ্জে। বৃষ্টির সঙ্গে বইবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াও। হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার সোমবার সেই ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের। আর এই আশঙ্কা থেকেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ইতিমধ্যেই আগামী কয়েকদিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে পর্যটক ও মৎস্যজীবীদেরও। দ্বীপপুঞ্জ সংলগ্ন সমুদ্রে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদেরও রবিবার বিকেলের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের প্রবেশ নিষেধ বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হওয়া বইতে পারে ওই সময়ে। এর পাশাপাশি ভেসেল পরিষেবা এবং সমুদ্র তীরবর্তী বিনোদনমূলক পর্যটন সম্পর্কিত ক্রিয়া-কলাপ বন্ধ রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উত্তরবঙ্গের উপরের দিকের পাঁচ জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে। দক্ষিণের জেলাগুলির ক্ষেত্রে পশ্চিমের ও উপকূলের জেলা ছাড়া বাকি কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কার্যত নেই বলেই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। এদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে। এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।