বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত। যা কিছু দিনের মধ্যেই নিম্নচাপে রূপান্তরিত হবে। এই ঘূর্ণাবর্ত দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা এবং সোমবার নিম্নচাপে পরিণত হবে। একইসঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, ৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হবে। ৭ মে তা পরিণত হবে নিম্নচাপে। ৮ মে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে গভীর নিম্নচাপটি। এই পথে নিম্নচাপের আরও শক্তি বাড়ানোর জোর সম্ভাবনা। আপাতত মৌসম ভবন বলছে, ৭ মে নিম্নচাপ সৃষ্টির পরই ঘূর্ণিঝড় হবে কি না,হলেও অভিমুখ কী হবে,তা জানানো সম্ভব হবে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় এই বছরের প্রথম ঘূর্ণঝড় বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে এর মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্যও। খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠকও করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই কন্ট্রোল রুম খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। রাজ্যের সব জেলাতে এই কন্ট্রোল রুম খোলার জন্য নির্দেশ এসে গিয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি সব জায়গায় বিপজ্জনক নদী বাঁধগুলি রয়েছে সেগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দ্রুত চলবে মেরামতির কাজ।
এদিকে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন সংস্থা জানাচ্ছে যে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে ‘মোচা’। এই নাম দিয়েছে ইয়েমেন। সেই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ বাংলাদেশ ও মায়ানমারের উপকূল বরাবর থাকার সম্ভাবনা।
এরই পাশাপাশি আলিপুর আবহাওযা দপ্তর সূত্রে খবর, আগামী ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতা-সহ আশপাশের এলাকায় আকাশ আংশিক ভাবে মেঘলা থাকবে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর।
এদিকে মৌসম ভবন সূত্রে খবর, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা উপকূলে আরও ভয়ঙ্কর শক্তিশালী রূপ নিতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়। এরফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তুমুল পরিমাণে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জেরে এই বিষয়ে নজর রয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের। এই নিয়ে প্রতিনিয়তই আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হবে নির্দিষ্ট এক সময় অন্তরই। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে যে, পূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশ ও মায়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব।
মৌসম ভবনের সতর্কতার পরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের নেতৃত্বে মঙ্গলবার একটি উচ্চস্তরীয় বৈঠকও করেন বলে ওড়িশা প্রশাসন সূত্রে খবর। এই বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ স্থির করা হয়।
এদিকে বুধবার মৌসম ভবন সূত্রে খবর, দেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর ও উত্তর পশ্চিম ভারতের একাধিক রাজ্যেও হবে বৃষ্টি। বৃষ্টি হবে পূর্ব ও উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতেও। এর থেকে বাদ পড়ছে না দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুও। পাশাপাশি সাইক্লোনের চোখরাঙানি থাকার জেরে এই পরিস্থিতিতে আগামী ৫ দিনের জন্য জারি করা হয়েছে অ্যালার্ট।