কলকাতা শহরের অলিতে -গলিতে নজরে আশে সংকীর্ণ এলাকা। কোথাও বা সরু একচিলতে গলি। আর এই সংকীর্ণ এলাকার মধ্যেই রয়েছে সেপটিক ট্যাংক। জায়গা সংকীর্ণ হওয়ায় পরিষ্কার করার গাড়ি ঢুকতে পারে না গলির ভিতরে। ফলে জমা মলমূত্র পরিষ্কার করতে গিয়ে মাথায় হাত পড়ে পুরকর্মীদের থেক পুরকর্তাদেরও। তবে এই সমস্যা আর থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপানা বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। নয়া এক দ্রব্য আনা হচ্ছে যা ওই সেপটিক ট্যাংক ফেলে দিলেই উবে যাবে মল-মূত্র। এই পদার্থটির নাম‘অ্যারোবায়ো সলিউশন’। যা মূলত ব্যাকটিরিয়া দিয়ে তৈরি। ফলে গন্ধ থাকারও প্রশ্ন নেই। আর এটাই হতে চলেছে কলকাতা পুরসভার নয়া পাইলট প্রোজেক্ট। এই প্রসঙ্গে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার এও জানান, নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরের এক সংস্থা প্রাথমিক বৈঠক সেরে গিয়েছে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে। পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, দ্রুত শুরু হবে এই পাইলট প্রোজেক্টের কাজ।
একইসঙ্গে দেবব্রতবাবু এও জানান, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অগুনতি মানুষ। এমনকি বস্তি অঞ্চলেও রাস্তা প্রশস্ত নয়। এক একটি কাঁচা ঘরে একসঙ্গে অনেকে থাকেন। স্বল্প পরিসরে সে সব জায়গায় পরিষ্কার করার গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হওয়ায়, সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা মুশকিল হচ্ছে।’ আর সেখানেই প্রয়োগ করা হবে এই সলিউশন। পাশাপাশি দেবব্রতবাবু এও জানান, এদিকে আবার বিস্তৃত হচ্ছে কলকাতা শহরও। সংযোজিত এলাকায় মাথা তুলছে একের পর এক ফ্ল্যাট। সে সমস্ত পেল্লায় আবাসনে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার বাসিন্দার বাস। মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, এই সমস্ত আবাসনের কথা ভেবে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার লিটারের সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করার গাড়ি কেনা হয়েছে।
‘অ্যারোবায়ো সলিউশন’ সম্পর্কে মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানান, নাগাল্যান্ড সরকার ইতিমধ্যেই বাড়িতে বাড়িতে এই অ্যারোবায়ো দিয়ে সুফল পেয়েছে। নাগাল্যান্ডের পুর নগরোন্নয়ন দপ্তরের পরামর্শদাতা ডা. নেইকিসেলি কির জানিয়েছেন, ‘অ্যারোবায়ো সলিউশন’সেপটিক ট্যাঙ্কের মলকে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে দিতে পারে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই জমা মলমূত্রের দুর্গন্ধও নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত মিথেন গ্যাসকেও নষ্ট করে দেবে এই ‘অ্যারোবায়ো সলিউশন’।