‘শীর্ষ আদালতের রায় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক,’ মন্তব্য রাজ্য বিজেপি সভাপতির

‘শীর্ষ আদালতের রায় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’ হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর এমনই মন্তব্য করতে দেখা গেল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ নিয়ে আমাদের কিছু বলার এক্তিয়ার নেই।’ তবে পাশাপাশি তিনি এও বলেন, এই রায়ে বাংলার মানুষ অত্যন্ত হতাশ হবেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই বাংলার মানুষ সারাজীবন মনে রাখবেন বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তাঁর নির্দেশ পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, এই মামলায় অন্য বিচারপতি নিয়োগের কথাও, এমনটাই সূত্রে খবর।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার করেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে অত্যন্ত ভালো চোখে দেখতেন। বাংলার মানুষ চাইতেন তিনি লড়াই করে যান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় আমাদের মানতে হবে।’ এরই রেশ ধরে বিজেপি রাজ্য সভাপতির যুক্তি, ‘কোনও বিচারপতি বা বিচারপতিদের বেঞ্চের উপর তো কোনও মামলা নির্ভর করে না। নির্ভর করে আইনের উপরে। যে সব তৃণমূল নেতারা ভাবছেন, হাফ ছেড়ে বাঁচলাম, তাঁদের হাফ ছেড়ে বাঁচার কথা ভাবার কোনও প্রয়োজন নেই। জেলে যাবেন। দুদিন আগে যেতেন, সেখানে দুদিন পরে যাবেন।’ সঙ্গে এও জানান, কিছু মানুষ ভাববেন বেঁচে গেলাম, কিন্তু বাঁচার কোনও সুযোগ থাকবে না বলেই মত তাঁর।
এদিকে এদিনের শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলের ধারনা, নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত বিধানসভা নির্বাচনে চূড়ান্ত হতাশাজনক ফলের পরেও রাজ্যে আন্দোলন সংগঠিত করেছিল গেরুয়া শিবির। এমনকি, নিয়োগ দুর্নীতিতে যে কজন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁর পরেও আরও কিছু শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রেপ্তার হবেন বলে ইঙ্গিত দিয়ে শোনা গিয়েছে একাধিক বিজেপি নেতাকে। তৃণমূলের ‘মাথা’ ধরা পড়বে বলে একাধিকবার বক্তব্য পেশ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বিজেপি রাজ্য সভাপতিও। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই রায় রাজনৈতিক ভাবে তাঁদের অনেকটা দুর্বল করল। তবে এখন গেরুয়া শিবিরের আন্দোলনের রূপরেখা কী হবে, সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 16 =