বাড়ির সামনে কালো পাথরে খোদাই করে লেখা রয়েছে সুকন্যা মণ্ডল। সেই সুকন্যাই এখন দিল্লিতে ইডির হেপাজতে। ফলে আরও শুনশান হয়ে পড়ল গরু পাচার মামলায় তিহার জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের নিচু পট্টির বাড়ি। আত্মীয় স্বজনরাও একে একে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে।
এক সময় বোলপুরের নিচু পট্টির বাড়ি দলীয় কর্মীদের আনাগোনায় সরগরম ছিল। কিন্তু গত বছরের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হতেই বাড়ি শুনশান হয়ে যায়। শুধুমাত্র বাড়ির উপরে অনুব্রত কন্যা সুকন্যা আর নিচে পুলিশি নিরাপত্তা। মাঝে মধ্যে সুকন্যার বান্ধবী এবং অনুব্রত মণ্ডলের দাদা সুব্রত মণ্ডলের পরিবার বাড়ির মধ্যে যাতায়াত করতেন। নেতা মন্ত্রীরা আগেই যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিল। দিন কয়েক আগে বাড়ির মধ্যে সুকন্যার অস্বাভাবিক আচরণের জন্য তাঁরাও যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলার নেতা মন্ত্রীদের নিয়মিত সুকন্যার খোঁজখবর রাখতে হবে। কিন্তু তারপরেও নেতা মন্ত্রীরা মণ্ডল বাড়ি এড়িয়ে চলেছেন। সুকন্যা বাড়িতে থাকাকালীন সেই ক্ষোভ ঘনিষ্ঠদের মধ্যে প্রকাশ করেছিলেন।
প্রথমত, বছর দুয়েক আগে সুকন্যার মা ছবি মণ্ডল মারা যান। মায়ের মৃত্যুতে অনেকটা একা হয়ে যান সুকন্যা। কারণ বাবা অনুব্রত মণ্ডল দলের কাজে বাড়ির বাইরে থাকলে মায়ের সঙ্গেই কাটাতেন। বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আরও একা হয়ে পরেন তিনি। বাড়ি থেকে খুব একটা বের হতেন না। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দু-দুবার ইডির ডাকও এড়িয়েছেন। কিন্তু বুধবার শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে গিয়ে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হলেন। অনুব্রত মণ্ডলের দাদা সুব্রত মণ্ডল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওদের পরিবারের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না। তবে ভাই (অনুব্রত) গ্রেপ্তারের পর সুকন্যার পাশে থাকার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন আগে রাতে যে অস্বাভাবিক আচরণ করেছিল তাতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর থেকে কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে সুকন্যা গ্রেপ্তার হতেই জেলা তৃণমূল তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে। দলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, সুকন্যা আমাদের দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্তি নয়। তবে তাকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হল তার নিন্দা করছি। কারণ বাবা গ্রেপ্তারের পর তদন্তকারী সংস্থাকে সব রকম সাহায্য করেছে সুকন্যা। তারপরও কেন গ্রেপ্তারের প্রয়োজন হল বুঝতে পারছি না। আমরা সুকন্যার পাশে আছি।