‘তৃণমূলে কেউ খারাপ কাজ করলে তাঁকে আমরা শাস্তি দিয়েছি। আর তোমরা কী করেছ? যাঁকে টাকা নিতে দেখা গেছে, তাঁকে বড় বড় পদ দিয়েছেন। তৃণমূলের আবর্জনাগুলো বিজেপির সম্পদ।’ আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের সভা থেকে বৃহস্পতিবার এই ভাষাতেই নিশানা করতে দেখা গেল তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন কমান্ডকে।পাশাপাশি এদিন দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে অভিষেকের এই বার্তাকে হুঁশিয়ারি বলেও মনে করছেন অনেকেই। তবে এটা স্পষ্ট হয়নি ঠিক কাকে শাস্তি দেওযার কথা এদিন বললেন অভিষেক। তবে শুধু বিজেপি নয়, এদিন ‘তৃণমূলের নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে আলিপুরদুয়ারের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর একে তোপ দাগতে দেখা যায় অভিষেককে। প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচনে ভোটের সংখ্যার নিরিখে এই বিধানসভাতেই এলাকাভিত্তিক ব্যাপক ধসের মুখে পড়েছিল শাসকশিবির। সেই জমি পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া তৃণমূল।আর সেই কারণেই এদিন যেন চ্যালেঞ্জ ছুড়েদিতে দেখা গেল অভিষেককে।বলেন, গত ছয় মাসে তিনি এই অঞ্চলে পাঁচবার এসেছেন। যদি আলিপুরদুয়ারে আবাস নিয়ে কেউ দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তিনি আর আলিপুরদুয়ার আসবেন না। পাশাপাশি একশো দিনের কাজে টাকা বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গেও কেন্দ্রকে তোপ দাগেন অভিষেক। বলেন, ‘আলিপুরদুয়ারের বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা চিঠি লিখে কেন্দ্র কে জানিয়েছে ১০০ দিনের টাকা যেনো না দেওয়া হয়।’ তবে এদিন এই কেন্দ্রের বঞ্চনার দায় কিছুটা হলেও আলিপুরদুয়ারবাসীর ঘাড়েই চাপান তিনি। এই প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, ‘১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিচ্ছে রাজ্য সরকার। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেখে ভোট দেননি। রাম মন্দির দেখে ভোট দিয়েছিলেন। ১০০ দিনের কাজ দেখে ভোট দেননি। আর আপনারা যাঁকে সাংসদ করে জিতিয়েছিলেন, তাঁকে আর দেখতে পান না। ৫টা বিধায়ককে জিতিয়েছিলেন। আপনারা যাঁদের বিধায়ক করেছিলেন আলিপুরদুয়ারে, তাঁরাই দিল্লিতে চিঠি লিখে বলছেন বাংলার টাকা বন্ধ করতে। এখন বুঝতে পারছেন, খাল কেটে কুমির এনেছেন। ‘আচ্ছে দিন’ আসবে বলে ভোট দিয়েছিলেন।আর এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ এরই রেশ ধরে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ, বিরোধী দলনেতাকে বলব বাংলার মানুষের টাকা আটকাবেন না। মানুষের সঙ্গে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবেন না।’ একইসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে বাংলার ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুধু বিজেপিকেই নয় অন্য বিরোধী শিবিরকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি অভিষেক। বলেন, ‘১৯৭২ থেকে সিপিএম লাগাতার সন্ত্রাস মজ্জাগত করে দিয়ে গিয়েছিল। আমরা সেই অবস্থার পরিবর্তন করতে এসেছি। মানুষ যাঁকে প্রাধান্য দেবেন, তাঁর পেছনেই দল আছেন।’ একইসঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘অনেকে বলছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নাটক করছেন রাস্তায়। আমি বিরোধী দলের নেতাদের বলছি, আপনার ক্ষমতা থাকলে, আপনিও নাটক করে দেখান। ছয় দিন রাস্তায় থেকে দেখান।’ এদিন তাঁর ভাষণের ছত্রে-ছত্রে যেন বিরোধী শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে দেখা গেল তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে।