রামনবমীতে হাওড়া-হুগলি ডালখোলাতে অশান্তির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

রামনবমীতে যে অশান্তির এবং বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল হাওড়া, হুগলি, ডালখোলায়, এবার সেই অশান্তির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি. এস. শিব জ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ এও নির্দেশ দেয়, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এনআইএ-কে সমস্ত নথি হস্তান্তর করতে হবে রাজ্যকে। প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
উল্লেখ্য, রামনবমীর অশান্তির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এনআইএ-কে দিয়ে এই ঘটনার তদন্তের দাবি করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে এনআইএ-এর তরফে কলকাতা হাইকোর্টকে জানানো হয় তারা এই ঘটনার তদন্ত করতে তৈরি। এরপরই বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার তদন্ত করবে এনআইএ।
এই নির্দেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলেন বিরোধী শিবির বিজেপির দিকেই।
এদিকে হাওড়ার শিবপুর, রিষড়ায় অশান্তি নিয়ন্ত্রণে আনতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয় পুলিশের তরফে। কিছু এলাকায় ইন্টারনেট কানেকশনও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল কিছু দিনের জন্য, যাতে কোনও ভুয়ো খবর ছড়িয়ে না পড়ে। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় দাবি করেছিলেন, ‘বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়।‘ পালটা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর প্রশ্ন তুলে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধীরা। সরাসরি তাঁরা রাজ্য় প্রশাসনকে তোপ দেগে সরব হয়েছিলেন।
এদিকে বিষ্ণুপুরে ইদ এবং রাম নবমীর মধ্যে হওয়া লাগাতার অশান্তির ঘটনায় সমস্ত এফআইআর হওয়া আগামী শুনানিতে খারিজ করার ইঙ্গিত দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, কোনও গোষ্ঠী বা দল নয় , এই সমস্ত গোলমাল লাগানোর নেপথ্যে কিছু মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থ কাজ করে । আর তাদের স্বার্থে বারে বারে পুলিশকে ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনারই সাগরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমস্ত ধর্মের মানুষজনের মিলেমিশে আয়োজন করার উদাহরণ তুলে ধরেন বিচারপতি। তিনি জানান, এটাই আমাদের দেশ। এটাই আমাদের গর্ব। সেখানে বিষ্ণুপুরের মতো কিছু ঘটনা ঘটানো হয় ব্যক্তিস্বার্থে। ১৫ মে মামলার পরিবর্তী শুনানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + ten =