বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট মামলায় নগরপালের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠল আদালতে

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বাড়ির সামনে পোস্টার সাঁটার ঘটনায় মঙ্গলবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশের বৃহত্তর ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেওয়া হল কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট সংক্রান্ত মামলার মঙ্গলবার শুনানি ছিল আদালতে।তবে এদিন মামলার শুনানিপর্বে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ে কলকাতার নগরপালের রিপোর্ট। সেদিন যে আইনজীবীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, তাঁদের নাম কেন উল্লেখ নেই এই রিপোর্টে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় আদালতে। এদিকে আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়, পুলিশ স্বীকার করেছে কোনও আইনজীবী গিয়ে ওই পোস্টার সাঁটিয়েছেন।আর এখানেই আদালতের প্রশ্ন, এমন ঘটনার পিছনে কারা জড়িত এবং রিপোর্টে কয়েকজনের নাম থাকলেও কেন তাঁদের ঠিকানা নেই তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এরপরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন,, ওইসব আইনজীবীর নাম ঠিকানা সহ জমা দেওয়ার। এই প্রসঙ্গে তিনি এ মন্তব্যও করেন, ‘বিচারপ্রক্রিয়া সংক্রান্ত অভিযোগ সামনে নিয়ে আসার জন্যই কোনও এক আইনজীবী এবং তাঁর সহযোগীরা এই কাজ করছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। কে সেই আইনজীবী, সেটা জানলেই তো ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে আসবে।’
এদিকে এই রিপোর্টে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, ছাপাখানায় ওই পোস্টার ছাপানো হয়েছিল তার হদিশ পাওয়া গেছে। এপিসি রোডে পার্ক প্রিন্টিং নামে একটি ছাপাখানায় পোস্টার ছাপানোর কাজ হয়েছে। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন জাহিদ হুসেন ও মোহাম্মদ ইকবাল নামে দুই ব্যক্তি যুক্ত। হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে এই কাজের কথা স্বীকার করেন।এরপর দু’জনকেই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এমন পোস্টার ছাপার পিছনে আইনজীবীদের কিছু দাবি তুলে ধরার ও বিচার প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পেয়েছে।এরপরই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার নতুন করে রিপোর্ট জমা দেবেন ওই আইনজীবীদের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে।
এদিকে ছয়জন অভিযুক্তর আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল পোস্টার সাঁটানোর জন্য। তাঁরা পয়সার জন্য পোস্টার লাগিয়েছে। কিন্তু সেখানে কী বিষয়বস্তু রয়েছে, তা তাঁরা জানতেন না। এদিকে বার কাউন্সিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ভিডিয়ো দেখে কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে। জাতীয় ও রাজ্য বার কাউন্সিলকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত নামগুলি নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করে আলোচনা করার জন্য। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে বলে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × three =