সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর এই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই শীর্ষ স্তরে নেতাদের তাঁদের জেলাওয়াড়ি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিল তৃণমূলের হাইকমান্ড। সঙ্গে তৈরি হল নির্বাচন কমিটি। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে একাধিক ঘটনায় দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসায় চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল। আর সেই কারণেই তৃণমূলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল হাইকম্যান্ড। সঙ্গে নজর দেওয়া হচ্ছে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করার দিকেও।
এদিকে তৃণমূল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যে শীর্ষ স্তরে নেতাদের জেলাওয়াড়ি দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৈরি হয়েছে নির্বাচন কমিটি। থাকছেন দলের শীর্ষনেতারা। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে তৃণমূলের রাজ্য নির্বাচনী কমিটির ২২ জনের একটি বৈঠকও হয় তৃণমূল ভবনে। সিদ্ধান্ত হয়, দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের পাশাপাশি এই শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন জেলার জোনাল ইলেকশন কমিটিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। সঙ্গে করবেন জেলা সফরও। তবে প্রার্থী বাছাইয়ের কোনও দায়িত্ব তাঁদের ওপর দেওয়া হয়নি। তবে জেলা নেতাদের নিয়ে যে জোনাল কমিটি তৈরি হয়েছে, তাঁরাই মূলত গ্রামবাংলার জনসংযোগের ওপর জোর দেবেন এটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে, কে বেশি জনসংযোগকারী নেতা হবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেই সর্বসাধারণের মতামত গ্রহণ করা হবে, এমনটা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুথধু তাই নয়, জনসংযোগে জোর দিতে সোমবার থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার শুরু উত্তরবঙ্গ থেকে। এবার অভিষেকের বক্তব্য অনুসারে ‘নবজোয়ার’আনতে তৎপর তৃণমূল।
এদিকে তৃণমূলের এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, ফিরহাদ হাকিম মুর্শিদাবাদ, মালদা , উত্তর দিনাজপুর, বীরভূমের দায়িত্বে থাকবেন। সহ দায়িত্বে থাকবেন নাদিমুল হক। এদিকে মালা রায় ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাওড়া জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও হুগলির সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অরূপ বিশ্বাসের ওপর। মানস ভুঁইঞার দায়িত্বে পূর্ব, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অরূপ বিশ্বাস, বুলুচিক বরাইক, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্পিতা ঘোষ, বিবেক গুপ্ত। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার দায়িত্ব পালন করবেন সুব্রত বক্সি নিজে।
তৃণমূলের এই স্ট্র্যাটেজি যে আসলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের শক্তিপরীক্ষা তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারণ, এই পঞ্চায়েত নির্বাচন আর লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে সময়ের ফারাক খুবই কম। আর এই পঞ্চায়েত নির্বাচনেই বোঝা যাবে যে গ্রাম বাংলার মানুষ কী চান বা তাঁদের মনের কথাও।