এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে ভারতে আসার সম্ভাবনা চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

গালওয়ান ও তাওয়াং সংঘর্ষের পর সম্ভবত এই প্রথম ভারতে পা রাখতে চলেছেন চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন অর্থাৎ এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে ভারতে আসছেন চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফু। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুও অংশ নেবেন এই বৈঠকে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে গালওয়ান এবং তাওয়াং সংঘর্ষের পর চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েন রয়েই গিয়েছে। তার মধ্যেই অরুণাচল প্রদেশের একাধিক এলাকাকে নিজেদের মানচিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে ফেল নাম বদল করে ফেলেছে শি- জিনপিংয়ের দেশ। যা নিয়ে কড়া বিবৃতি দেওয়া হয় ভারতের বিদেশমন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফ থেকেও। এদিকে আবার এরই মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অরুণাচল সফর করেছেন। শাহের এই সফর নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বাদানুবাদ চলছে। এরই মাঝে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভারত সফর কূটনৈতিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ধারনা আন্তর্জাতিক মহলের।
সূত্রে খবর, আগামী ২৭ এবং ২৮শে এপ্রিল ভারতের সভাপতিত্বে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন অর্থাৎ এসসিও বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এই বৈঠকে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের অংশগ্রহণের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি বৈঠকে অংশ নিতে পারেন। পাকিস্তান ছাড়া, চিন, রাশিয়া সহ অন্যান্য এসসিও সদস্যদেশগুলি বৈঠকে তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এসসিও-র বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সহ আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এসসিও-রসদস্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, রাশিয়া, চিন, কিরগিজস্তান, কাজাখস্তান, তাজাকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং পাকিস্তান।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের পর আগামী ৪ ও ৫ মে গোয়ায় এসসিও সদস্যদেশের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ভারত এই বছর জি-২০-র সঙ্গে এসসি-তেও সভাপতিত্ব করছে। বৈঠকে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো সহ এসসিও সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা অংশ নেবেন। এই বৈঠকে যোগ দিতে বিলাওয়াল ভুট্টোর ভারত সফরের বিষয়টি ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ২০১৪ সালে শেষবার ভারতের মাটিতে পা রেখেছিলেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরেই দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে কোনও শীর্ষ মন্ত্রী ভারত সফরে আসেননি। এর আগে, ২০১১ সালে শেষ কোনও পাক বিদেশমন্ত্রী ভারত সফরে এসেছিলেন। সেই সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে ভারতে এসেছিলেন তৎকালীন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 2 =