কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজের চিঠি নিয়ে তরজায় জড়াল তৃণমূল-বিজেপি

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এর চিঠি নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। নিজে মন্ত্রী হয়েও কোন দফতরে তৃণমূলের চিঠি পাঠানোর কথা বলেছেন গিরিরাজ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য গিরিরাজের জবাবে কোনও ভুল নেই। নিয়ম মেনেই চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, এই ইস্যুতে শাসক দলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। মন্ত্রী গিরিরাজের দায়িত্ব তিনি রীতিমতো ছকের আকারে বুঝিয়েছেন শাসকদলের নেতাদের। শুভেন্দু তাঁর টুইটে এও উল্লেখ করেন, গিরিরাজ সিং-এর অধীনে দুটি মন্ত্রক রয়েছে। এক, পঞ্চায়েতি রাজ এবং দ্বিতীয়টি গ্রামোন্নয়ন। গ্রামোন্নয়ন বিভাগের আবার দুটি ভাগ রয়েছে। আর এখানেই শুভেন্দুর দাবি, তৃণমূল বুঝতেই পারেনি মন্ত্রীর চিঠি। বিরোধী দলনেতার দাবি, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে দুটি ভাগ রয়েছে। সে কারণেই গিরিরাজ বলেছেন, সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ যেন একেবারে প্রশাসনিক নিয়ম-নীতির পাঠ। এদিকে এই একই ইস্যুতে শাসক দলকে বিদ্ধ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে গিরিরাজ সিং-এর দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা। ১০০ দিনের কাজের টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়াও হয়েছিল মন্ত্রকে। শুক্রবার সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে জবাব দেন গিরিরাজ সিং। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে মন্ত্রী জানান, তাঁদের আবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন তিনি। আর এখানেই তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগবঙ্গের শাসকদলকে বিভ্রান্ত করছেন গিরিরাজ সিং। এই প্রসঙ্গে নিজেদের ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা।এখানে বলে রাখা শ্রেয়, এমন অভিযোগ তুলেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে এর আগে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। ১০০ দিনের কাজ অর্থাৎ মনরেগা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় গ্রামন্নোয়ন মন্ত্রকের কাছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা পাওনা রাজ্যের। গত প্রায় আড়াই বছর ধরে রাজ্যে ১০০ দিনের কাছে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে এই টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র।
তবে গিরিরাজের চিঠি পাওয়ার পরই প্রশ্নও তোলা হয় শাসকদলের তরফ থেকে। তারই প্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার টুইটে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন,’ গিরিরাজ সিং কি গিরিরাজ সিং-কেই চিঠি পাঠাচ্ছেন?’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই চিঠি নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যখন তৃণমূল সাংসদরা দিল্লি গিয়েছিলেন, তখন গিরিরাজের সঙ্গে দেখা হয়নি। তিনি দিল্লিতে ছিলেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রকের তরফ থেকে। পরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধরনাতও বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকের এই টুইটের জবাব দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এও দাবি করেন, দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে সংসদে গেলে এইসব নীতি বোঝা যায় না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সম্পর্কে কোনও ধারনা নেই বলেও টুইটে মন্তব্য করেন তিনি।
একই বক্তব্য সুকান্ত মজুমদারেরও। তিনি উল্লেখ করেছেন, গিরিরাজ সিং একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন। প্রতি ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট অফিসারেরা দায়িত্বে রয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলকে কটাক্ষও করেন সুকান্ত। তাঁর দাবি, ‘যাঁরা লেটারহেডে চাকরির সুপারিশপত্র লিখে থাকেন, তাঁরা এই চিঠি বুঝতে পারবেন না।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =