নিয়োগ দুর্নীতিতে শুধু শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যের একাধিক পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রেও হাত রয়েছে অয়নের তা আন্দাজ করে শুক্রবার এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের তরফ থেকে এই নির্দেশ পাওয়ার পরই পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নামে ইডি। আর সেখান থেকেই মিলল ২০০ কোটির হদিশ, এমনটাই দাবি করা হচ্ছে ইডি-র তরফ থেকে।
এই প্রসঙ্গে ইডি-র তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, ধৃত অয়ন শীল শুধুমাত্র পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন। আর এই কথা ইডি-র দীর্ঘ জেরায় স্বীকারও করেছেন অয়ন শীল স্বয়ং। এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। আর এই রিপোর্টট জমা দিয়েছেন খোদ ইডির কলকাতা জোনাল অফিসের অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর মিথিলেশকুমার মিশ্র। আর ইডির কলকাতা জোনাল অফিসের অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর মিথিলেশকুমার মিশ্রের এই রিপোর্টে এও উল্লেখ রয়েছে যে, রাজ্যের প্রায় প্রতিটি পুরসভায় এই দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে মূলত রয়েছে কাঁচড়াপাড়া, নিউ ব্য়ারাকপুর, কামারহাটি, বরানগর, টিটাগড়, হালিশহর পুরসভা। ফলে এই কয়টি পুরসভা স্বাভাবিক ভাবেই এখন ইডির স্ক্যানারে। শুধু এই কটি পুরসভাই নয়, ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের আরও অনেক পুরসভা আতসকাচের তলায়। যেখানে মজদুর, সুইপার, ক্লার্ক, পিওন পদে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাটেন্ডেন্ট, অ্যাসিসট্যান্ট মিস্ত্রি, পাম্প অপারেটর, হেল্পার, স্যানিটারি অ্যাসিসট্যান্ট, গাড়ির চালক পদেও বেআইনি নিয়োগেরও। আর এই নিয়োগে অয়ন শীলের মতো নাম যেন উঠে এসেছে, একইভাবে একাধিক সরকারি আধিকারিক, রাজনৈতিক নেতা যুক্ত থাকার সম্ভাবনাও দেখছে ইডি। এইসব চাকরি দিতেই ২০০ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলা হয় বলে দাবি করা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। রিপোর্টে এমনও বলা আছে যে, নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘটনাটা এমন এ যেন সমান্তরাল রিক্রুটমেন্ট বোর্ড চালনা করেছেন অয়ন এবং অন্যান্যরা।
ইডি-র এই রিপোর্ট সামনে আসার পরই তরজা শুরু শাসকদ এবং বিরোধীদের মধ্যে। এই ইস্যুতে শাসকদলকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, ‘তদন্ত তো হওয়া উচিত। প্রতিটি পুরসভায় তৃণমূল তার দলের লোকজনকে ক্যাজুয়াল ক্যাটাগরিতে ইচ্ছামতো নিয়োগ করেছে। এ কারণেই প্রতিটি পুরসভায় এখন আয়ের থেকে ব্যয় বেশি। ক্যাজুয়াল স্টাফদের মাইনে দিতে দিতে সব টাকা চলে যাচ্ছে।’
পাল্টা তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, ‘অভিযোগকারীও ইডি, তদন্তও করবে ইডি। ভারতের একটা আইন ব্যবস্থা তো আছে। প্রাথমিক-মাধ্যমিক নিয়োগের ব্যাপারে কিছু লোক অভিযোগ করেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট ইডিকে তদন্ত করতে দেয়। এখানে তো অভিযোগটা কার সেটাই জানতে পারছি না। কোনও অভিযোগ নেই। ইডি একটা ন্যারেটিভ তৈরি করে দিল।‘