সুপ্রিম নির্দেশে স্বস্তিতে অভিষেক, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ

সুপ্রিম নির্দেশে বড় স্বস্তিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। অর্থাৎ, কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাতে আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৪ এপ্রিল।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশনামায় বলা হয়েছিল, কুন্তল ঘোষের চিঠির বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত সেই নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, নিম্ন আদালতের বিচারককে একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে চাপ তৈরির অভিযোগ তুলেছিলেন কুন্তল। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে দিয়ে জোর করে একাধিক ব্যক্তির নাম বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে সিবিআই। এমনকী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এমনকী কুন্তল আদালত চত্বরেও দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তাঁর মুখ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঘটনাচক্রে অভিষেক ঠিক তার আগের দিনই শহিদ মিনারে দাঁড়িয়ে এই একই কথা কথা বলতে শোনা যায় তৃণণূলের সেকেন্ড-ইন- কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এর পরেও কুন্তলের গলাতেও ছিল সেই একই সুর। এই দাবি করার পর আলিপুর আদালতের বিচারককে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেন। এই চিঠির ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে এবং নির্দেশনামায় জানান প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। সঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিম্ন আদালতে জমা দেওয়া কুন্তল ঘোষের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারককে নির্দেশ দেন। হেস্টিংস থানার অভিযোগ পত্রও আদালতে পেশ করার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এটা মারাত্মক প্রবণতা। এই অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না।’
এদিকে কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে যে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল, সেখানে বেশ কিছু অংশ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানানো হয় রাজ্যের শাসক দলের তরফ থেকে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বারবার কলকাতা হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের বিরোধিতা করেন।
এদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের পর তাঁকে আক্রমণ করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বলেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজনৈতিক দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। মানহানির মামলা করলে কোর্টে দাঁড়িয়ে ফেস করব। তিনি এক্তিয়ার বর্হিভূত কথা বলেছেন।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যা বলেছেন তা আইন বর্হিভূত। তিনি এই কথা অর্ডারে লেখেননি কারণ তা লিখলে উচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যেত। ঠাণ্ডা মাথায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপি, কংগ্রেস, বামেদের হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্র হনন করছেন বলেও দাবি করেন কুণাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − two =