মালদা: দু’দিন ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে অষ্টম শ্রেণির দুই নাবালিকা ছাত্রীর আত্মগোপন করে থাকার বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ালো। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে রতুয়া থানার সামসি স্টেশন থেকে ওই দুই নাবালিকা ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারা দু’জনেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একই শ্রেণিতে সহপাঠী রয়েছে ওই দুই ছাত্রী। কি কারণে দু’দিন ধরে নিজেদের আত্মগোপন করে রেখেছিল ওই দুই ছাত্রী, সে ব্যাপারেও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য জড়িত রয়েছে কিনা অথবা ওই নাবালিকা দুই ছাত্রী কোনো নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছিল কিনা সে ব্যাপারে ময়নাতদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই দুই নাবালিকা ছাত্রী দু’দিন কোথায় কিভাবে চলাফেরা করেছে, কাদের সঙ্গে কথা বলেছে তারও সিসিটিভি ফুটেজের সহযোগিতা নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার ওই দুই ছাত্রীকে আদালতের নির্দেশ মেনে মালদা শিশু সুরক্ষা কমিশনের হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে তদন্তকারী পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল নাবালিকা দুই সহপাঠী। একই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত তারা। তাদের বাড়িও চাঁচলে। ৭ এপ্রিল পরিবারের ওপর অভিমান করে বাড়ি না ফেরার জেদ নিয়ে দুই বান্ধবী চাঁচলের একটি লজে আত্মগোপন করার চেষ্টা করে। কিন্তু দুইজনই নাবালিকা হওয়ায় লজ কর্তৃপক্ষ তাদের ঠাঁই দেয়নি। পরে তারা সামসি স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকে। সারাদিন বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা চাচোল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ করে। শুরু হয় তল্লাশি। সন্ধ্যায় পুলিশ ওই নিখোঁজ দুই সহপাঠীর আত্মীয়কে নিয়ে সামসি স্টেশনেও খোঁজ নিতে যায়। কিশোরীরা আড়াল থেকে আত্মীয়কে দেখে অন্যত্র লুকিয়ে যায়।
তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই দুই নাবালিক স্থানীয় একটি রিসোর্টে লুকিয়ে রাত কাটায়। পরের দিন সকালেও থাকে। ৮ এপ্রিল বিকেল নাগাদ আবার চাঁচলে আসে। চাঁচলের একটি বাড়িতে পেয়িংগেস্ট হিসেবে আত্মগোপনও করে। কিন্তু ওই দুই বান্ধবী স্কুল ও টিউশনি না গিয়ে ঘরে বন্দি হয়ে থাকে দু’দিন। বাড়ির মালিকের সন্দেহ হয়। এরপর বাড়ির মালিকও তাদের তাড়িয়ে দেয় ১১ এপ্রিল। দিশেহারা হয়ে চাঁচল শহরের বুকে ঘোরাফেরা করে এই দুই বান্ধবী। অবশেষে মঙ্গল রাতে তারা পুলিশের খপ্পড়ে আসে।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, ওই দুই নাবালিকাকে উদ্ধার করে চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। আদালতে নির্দেশে দুই নাবালিকাকে পাঠানো হয় মালদা শিশু সুরক্ষা কমিশনের হোমে।