পার্কিং-ফি ইস্যুতে কোথাও একটা ঠাণ্ডা লডা়ই হঠাৎ-ই যেন শুরু হয়েছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আর মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মধ্যে। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শাসকদলের তরফে বোঝানোর চেষ্টা হল, পার্কিং ফি-র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব নেই দলে। কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম শনিবার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, ‘পার্কিং ফি ইস্যু ক্লোজড চ্যাপ্টার।’ পাশাপাশি কলকাতার মেয়র ফিরহাদের সুখ্যাতি করে এও জানাতে ভোলেননি যে, ‘ফিরহাদ হাকিম যোগ্য লোক। পুরনো সিনিয়র নেতা। তাঁর সঙ্গে কোনও বিরোধিতা নেই।’
প্রসঙ্গত, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির কথা জানতেন না। জানার পর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। কুণালের মন্তব্যের পর ‘ক্ষুব্ধ’ হতে দেখা যায় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। স্পষ্টই জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। সঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের তরফে কেনও কেউ বলবে তা নিয়েও। এর কিছু পরেই শুক্রবার সন্ধেতেই তৃণমূলের তরফে পার্কিং-ফি এর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য কলকাতা পুরনিগমকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করা হয় তৃণমূলের তরফ থেকে। এরপরই পুরনিগমের তরফেও পার্কিং ফি প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়। এদিকে এই পার্কিং-ফি ইস্যুতে কুণাল ও ফিরহাদের মন্তব্য ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে শুরু হয় জল্পনা। অনেকে এ প্রশ্নও তোলেন, তৃণমূলের শীর্ষস্তরে বিরোধ প্রকট হয়ে উঠেছে কি না তা নিয়েও । যদিও সেই জল্পনায় একেবারে জল ঢেলে রাজ্য তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, ‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই। মানুষের চাপ হচ্ছিল। দল দলের অভিমুখ থেকে বলেছে। ফিরহাদ হাকিম যোগ্য লোক। পুরনো সিনিয়র নেতা। তাঁর সঙ্গে কোনও বিরোধিতা নেই। যতটুকু বলার ছিল বলেছি। আর কিছু বলার নেই।’ একইসঙ্গে ফিরহাদের মন্তব্য প্রসঙ্গেও কুণাল বলেন, ‘দলের পার্ট যা ছিল হয়ে গিয়েছে। আমাকে উদ্দেশ্য করে ববিদা বলবে কেন? আমার তা মনে হয় না। ববিদা-ই বিরোধীদের সব জবাব দিতে যোগ্য মানুষ।’ পাশাপাশি কুণাল এও জানান, ‘দিলীপবাবুরা দাম বাড়ানোর পক্ষে। আমরা পক্ষে নই।’ অন্যদিকে, চেতলা রাখি সংঘের ক্লাবে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে ফিরহাদ হাকিমকে পার্কিং-ফি ইস্যুতেও পুরো বিষয়টি খুবই দক্ষতা এবং কুশলতার সঙ্গে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়।
এদিকে কুড়মি আন্দোলন নিয়েও শাসকদলের তরফে বিশেষ বার্তা দেন কুণাল ঘোষ। আন্দোলন তুলে নেওয়ার বার্তাও দেন তিনি। আর এই প্রসঙ্গে এও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কুড়মি আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ, অবরোধ তুলে নিন।’ একইসঙ্গে বাংলা অশান্ত হওয়ার অভিযোগ খারিজ করে তাঁর পাল্টা দাবি, ‘বাংলায় শান্তি আছে। সব স্বাভাবিক। আর বামেরা মিছিল করছে। এটা অদ্ভুত ব্যাপার। ওদের মিছিলের জন্য মানুষের সমস্যা হতে পারে।’ তবে বালুরঘাটে দণ্ডি কাটানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করতে দেখা যায় কুণাল ঘোষকে। বলেন, ‘তৃণমূল এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না। মহিলাদের অবমাননার নিন্দা করি আমরা। দলের তরফে গোটা ঘটনার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’