রিষড়ার পর এবার হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলে যে হামলার ঘটনা ঘটেছিল তার পেছনে কী কারণ ছিল তা খুঁজে বের করতে এলেন বিজেপির বিশেষ প্রতিনিধি দল। রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় সময় বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে হাওড়ার দিকে আসছিলেন তখন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজাতে থাকা কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা আটকে দেন এই দলটিকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শিবপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি পুলিশ সূ্রে এ খবরও মিলেছে যে, এই বিশেষ দলে ছিলেন ছয়জন সদস্য। যার মধ্যে ছিলেন আইনজীবী এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।
এদিকে পুলিশের এই ধরনের ব্যবহারে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ রবিবার যেভাবে হাওড়া সিটি পুলিশ অধিকারকরা তাঁদের যেতে দিলেন না তাতে এটা প্রমাণিত যে হাওড়ার ওই দাঙ্গাতে পুলিশের প্রত্যক্ষ মদত ছিল। আর এই সত্যটা যাতে প্রকাশ্যে না চলে আসে সেই কারণেই তাঁদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। এমনকী তাঁরা এ দাবিও করেন যে, পুলিশের উচ্চ অধিকারিকদের তাঁদের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে ১৪৪ ধারা ভেঙে তাঁরা ওই এলাকাতে যাবেন না। প্রয়োজনে পুলিশের গাড়ি করেই তাঁরা ওই স্থানে যেতে চান।
এই ঘটনায় রাষ্ট্র মহিলা আয়োগের সদস্যা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চারু খান্না অভিযোগ, তাঁদের সন্দেহ ওই ঘটনার পেছনে হাওড়া সিটি পুলিশের মদত আছে। তাই তাঁরা ওই এলাকাতে তাঁদেরকে ঢুকতে দিতে চাইছেন না। তবে পাশাপাশি এটাও তাঁরা জানান, ওই এলাকাতে তাঁরা যাবেনই। এদিকে হাওড়া সিটি পুলিশ আধিকারিকরা জানান, তাঁদের কাছে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আছে। যদিও এই নির্দেশের পিছনে তাঁরা কোনও যুক্তি ও আইনসঙ্গত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এরপরই অফিসে ফিরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবেন বলেও জানান চারু খান্না।
উল্লেখ্য গত বছরের মতো এই বছরেও রামনবমীর দিন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতে হাওড়ার সন্ধ্যা বাজার কাছে অঞ্জনী পুত্র সেনার রামনবমীর মিছিলে ফের বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। আরও অভিযোগ, সন্ধ্যাবাজারের কাছে মিছিল পৌঁছলে মিছিলের ওপর বিয়ারের বোতল ও কাঁচের বোতল ছোঁড়া হয়। এই ঘটনায় অনেক লোকের মাথা ফাটে। আর এই ঘটনায় পুরো রামনবমী শোভাযাত্রা পণ্ড হয়ে যায়। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ জন কর্মী আহত হন বলেই সূত্রের খবর। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে অঞ্জনী পুত্র সেনারা। এরপর তাঁদের ওপর পুলিশ লাঠি চার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় বলেও অভিযোগ করে মিছিলের সংগঠকরা। তাঁদের অভিযোগ যারা শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপরে হামলা চালালো তাঁদের উপরে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। প্রসঙ্গত, গত বছরেও অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে এই সন্ধ্যা বাজার এলাকা থেকেই ইট ও কাঁচের বোতল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিলো। যা নিয়ে পরবর্তীকালে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়। এবারের সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবারের ঘটনা ঘিরেও ফের তোলপাড় বঙ্গ রাজ্য রাজনীতি।