ফের জেল হেপাজতে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৯ এপ্রিল আবারও আদালতে পেশ করা হবে তাঁকে। বুধবার এমনটাই রায় ব্যাঙ্কশাল আদালতের। এদিনও শান্তনুর আইনজীবী তাঁর জামিনের আর্জি জানান। তবে তাতে চিঁড়ে ভেজেনি।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, জেল হেপাজত শেষে বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর আইনজীবী রাজেন্দ্র রায়চৌধুরী, প্রীতম ভট্টাচার্যরা শুনানির শুরুতেই বিচারকের কাছে আর্জি জানান, ‘যতবার ডেকেছে ততবার গেছি, তদন্তে সহযোগিতা করেছেন আমাদের মক্কেল। ওঁনাকে জেল হেপাজতে রাখলে সোশ্যাল প্রেস্টিজ হ্যাম্পার হচ্ছে। উনি শিক্ষিত।’ এরই রেশ ধরে বিচারক আইনজীবী শান্তনুর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। প্রত্যুত্তরে আইনজীবীরা জানান, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনার পর মাল্টিমিডিয়ার আইটিতে ডিপ্লোমা করেছেন তাঁদের মক্কেল। এছাড়া তাঁরা জানান, শান্তনুর হোটেলের ব্যবসা রয়েছে। মোবাইল এবং প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা রয়েছে। সেগুলি থেকেই আয় করেন। বাড়ির একমাত্র রুজি রোজগারের ভরসা তিনি। পাশাপাশি আইনজীবীরা এদিন এও দাবি করেন, শান্তনুর বাড়ি থেকে নগদ টাকা উদ্ধারও হয়নি।
এদিকে জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন ইডি’র আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তিনি সওয়াল-জবাবে জানতে চান, ‘সরকারি কর্মী হলে ব্যবসা কী করে করেন? নামে বেনামে মোট ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। শান্তনুর যে কোম্পানি রয়েছে তা শান্তনুর ছেলের নামে। ইভান হলেন তাঁর ছেলে। ছেলের নামে কোম্পানি। স্ত্রী এবং আরও ভুয়ো কর্ণধার রয়েছেন। এদিকে উনি চাকরি করেন ডব্লুউবিএসইডিসিএল-এ। তাঁর চাকরি বাবদ ২-৬লক্ষ টাকা বার্ষিক আয় করেন। তাহলে কীভাবে তাঁর নামে বেনামে ২০ কোটি সম্পত্তি হয় এ প্রশ্নও তোলেন ইডি-র আইনজীবী। আর এখানেই ইডি-র আইনজীবী নিশ্চিত যে, এই কোম্পানিতে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ঢুকেছে এবং নগদে বিভিন্ন সম্পত্তি কেনা হয়েছে।’ এদিকে জেলে গিয়ে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করার আবেদনও জানায় ইডি।
শুধু তাই নয়, এদিন সওয়াল জবাবের পর বিচারককে দেখানো হয় কেস ডায়েরি। কেস ডায়েরি দেখিয়ে ইডি’র আইনজীবী বিচারককে জানান, ‘কেস ডায়েরি দেখে নিন। ভবিষ্যতে বুঝতে পারবেন কী হতে চলেছে। একবার কেস ডায়েরিতে প্রভাবশালীদের নাম শুধু দেখুন। প্রকাশ্যে নামগুলো আদালতে প্রকাশ্যে বলা যাবে না।’
এরপর আদালত থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিককে সামনে মুখ খোলেন শান্তনু। ইভান কোম্পানি যে তাঁর ছেলের নামে তাও জানান তিনি। তবে তাঁর বাড়ি থেকে যে ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে সে বিষয়ে শান্তনু জানান, ওএমআর শিট উদ্ধারের দাবি ভিত্তিহীন। পাশাপাশি শান্তনু এও জানান, ‘এখন শুধু দেখা আর শোনার সময়।’