মাকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ ছেলের, মানসিক অবসাদ না অন্য কোনও কারণ, তদন্তে পুলিশ

মাকে খুন। তাও আবার মাঝরাতে থানায় এসে স্বীকারোক্তি করে আত্মসমর্পণ ছেলের। ঠিক এমন ঘটনাই ঘটে সোমবার রাত দেড়াটা নাগাদ নারায়ণপুর থানায়। নারায়ণপুর থানা সূতেরে খবর, এই সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন নিজেদের কাজেই। এদিকে থানার সামনে ইতঃস্তত ঘুরে বেরাচ্ছিলেন বছর তিরিশের এক যুবক। তা নজর পড়ে থানারই এক কনস্টেবলের। থানার সামনে এরকম উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরার কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই ছেলেটা নিজেই হুড়হুড়িয়ে ঢুকে পড়েন থানার ভিতর। তারপর কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারেকর কাছে এক লাইনের স্বীকারোক্তি,‘স্যার, মাকে খুন করে এসেছি, বডি বাড়িতে।’ স্বাভাবিক ভাবেই বছর তিরিশের এক যুবকের এমন কথায় হতভম্ব হয়ে যান নারায়ণপুর থানার পুলিশকর্মীরা। এরপই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লক্ষ্মী সাঁতরার দেহ উদ্ধার করে। এরপর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোও হয়।
নারায়ণপুর পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম লক্ষ্মী সাঁতরা। বয়স প্রায় ৪৯। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বাচল ২১ নম্বর লেনে মায়ের সঙ্গে থাকতেন সোমনাথ। তিনি সেভাবে কোনও কাজ করতেন না। অথচ বিয়ে করে নিয়েছিলেন। সংসারে অশান্তি হওয়ায় স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার কাছে গিয়ে থাকতে শুরু করেন সোমনাথের স্ত্রী। তারপর মা-ছেলেই বাড়িতে থাকতেন। জানা যাচ্ছে, লক্ষ্মীই একটি বেসরকারি সংস্থায় ছোটখাটো কাজ করে সংসার চালাতেন। তবুও মায়ের কাছ থেকে টাকা চাইতেন তিনি। তা নিয়েই নিত্য অশান্তি হত। যার ফলে সংসারে আর্থিক অনটনে চলছিল। সোমবারও মায়ের সঙ্গে বিবাদ হয় সোমনাথ সাঁতরার। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, অশান্তি চলাকালীনই মায়ের গলা টিপে ধরেন তিনি। তাঁর মায়ের শ্বাস আটকে যায়। এরপর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ ঘরেই বসে থাকেন তিনি। তারপর পোশাক বদলে সোজা চলে যান থানায়। নারায়ণপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এরপরই সোমনাথ সাঁতরাক গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সোমনাথের এক প্রতিবেশীও এই ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘রাত ১টায় থানা গিয়ে বলেছে, মাকে মেরে দিয়েছে। সংসারে ঠিক কী নিয়ে অশান্তি ছিল, তা তো সেভাবে বলতে পারব না। তবে ছেলেটা সবসময়ই ফোন নিয়ে থাকত।’ পুলিশে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার পিছনে কেবলই কি মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × four =