বিমানে যাত্রা করার আগে টেনশনই টেনশন। একে রাস্তার জ্যাম, তার ওপর কাগজপত্রের একাধিক ঝঞ্জাট। ফেল এসব সামাল দিতে বাড়ি থেকে অনেক আগেই বের হতে হয় দমদম বিমানবন্দর দিয়ে যাঁরা যাতায়াত করেন তাঁদের সকলকেই। তবে এই বিমানবন্দরে এসে এই কাগপত্রের ঝঞ্জাট থেকে মুক্তি দিতে এবার বেশ কিছু পরিবর্তন আনল কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। শুরু হল ‘ডিজি যাত্রা’। এতদিন নিয়ম ছিল টিকিট বুকিং করার পর বিমানবন্দরে গিয়ে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করা। অথবা বাড়ি থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করা যেত। যা বিশেষত শুরু হয় কোভিড কালে। এরপর বিমানবন্দরে চলে চেকিং পর্ব ৷ সেখান থেকে ফের বোর্ডিং পাস স্ক্যান করে উঠতে হয় বিমানে। তবে এবার এতো ঝামেলা আর পোহাতে হবে না বিমানযাত্রীদের। এমনটাই জানানো হয়েছে দমদম বিমানবন্দর সূত্রে। দমদম বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি.পাট্টাভি এই প্রসঙ্গে জানান, ‘যাত্রীদের যাতায়াতে কোনও ঝক্কি থাকবে না আর। কম সময়ে যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন।‘
শুক্রবার থেকে দমদম বিমানবন্দরে চালু হল ফেসিয়াল রেকগনাইজেশন বেসড বোর্ডিং সিস্টেম। সূত্রে খবর, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে এনইসি কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের সাহায্য নিয়েছিল এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। তারা এই প্রযুক্তির দিকটি নজরে রাখছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বোর্ডিং করার ক্ষেত্রে যাত্রীদের একটি নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে প্যাসেঞ্জার ডিটেলস, পিএনআর এবং ফেসিয়াল বায়োমেট্রিক্স আপলোড করতে হবে। যা বায়োমেট্রিক বোর্ডিং সিস্টেমের তথ্য ভাণ্ডারে রেকর্ড হিসেবে থাকবে। এরপর যে বিমানবন্দরের মাধ্যমে যাত্রী ভ্রমণ করবেন সেই বিমানবন্দরে ফেসিয়াল রেকগনাইজেশন বেসড বোর্ডিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন। এই গোটা প্রক্রিয়ায় নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিজি যাত্রা’।
এই ডিজি যাত্রা আদতে হল ‘ফেস ডিটেকশন’ অর্থাৎ ‘মুখ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি’র উপর ভিত্তি করে তৈরি একটি বায়োমেট্রিক অ্যাপ। এই অ্যাপ পরিষেবা চালু হলে বিমানবন্দরে যাত্রীদের আর বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের পরিচয়জ্ঞাপক নথিপত্র প্রদর্শন করতে হবে না। এই প্রযুক্তির সাহায্যে বিমানবন্দরে প্রবেশ, নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাচাই এলাকা এবং বিমানের বোর্ডিং প্রক্রিয়ার মতো সমস্ত চেকপয়েন্টে ফেসিয়াল রেকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে স্বচ্ছন্দে প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে সব মিলিয়ে বোর্ডিং প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রতিটি চেকপয়েন্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে তিন সেকেন্ডেরও কম সময় লাগবে। কারণ, এই ডিজি যাত্রায় যাত্রীদের মুখই হয়ে উঠবে তাঁদের পরিচয়জ্ঞাপক নথি। এর মধ্যেই সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের পরিচয় প্রমাণ, ভ্যাকসিন শংসাপত্র এবং বোর্ডিং পাস সবই থাকবে।