ফের বিস্ফোরক কুন্তল। বৃহস্পতিবার তিনি জানালেন তাঁ মুখ থেকে জোর করে অভিষেকের নাম বলানোর চেষ্টা চলছে। আর তা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। এদিন আদালতে পেশের আগে নিয়োগে দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তেলর দাবি এমনটাই।
প্রসঙ্গত, ঠিক একই কথা বলতে শোনা গিয়েছিল বুধবার শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। আর বৃহস্পতিবার তাতেই যেন সিলমোহর দিলেন কুন্তল। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করার আগে কুন্তল ঘোষকে যে প্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই প্রসঙ্গেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে বার্তা দিয়েছেন শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকে সেই প্রসঙ্গে এদিন কুন্তলকে যেন প্রত্যয়ী আর আত্মবিশ্বাসী দেখাল। বরাবরই অত্যন্ত ‘কনফিডেন্ট’ তিনি। এদিন যেন ছিলেন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। এদিন কুন্তল কোনও রাখঢাক না করেই জানান, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দেওয়া মানে আমাদের বুক চওড়া করা। এজেন্সিরা বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে নেতাদের নাম বের করার চেষ্টা করছে।’ দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও তিনি বলেন, “মা মাটি মানুষের আদর্শের দলের লোক আমরা। ফলে ওই ধরনের ভয়কে পাত্তা দিই না। আমরা বুক চওড়া করে চলি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলেছেন।’ পাশাপাশি কুন্তল এও জানান, ‘আমাদের যত নেতা আছে, তাঁদের নাম বের করার চেষ্টা করছে। বলপূর্বক চেষ্টা করছে।’
রাজনতিক বিশ্লেষকদের কথায়, ‘নেতার বলা বাণী ‘অক্সিজেনের’ কাজ করছে। তারই প্রমাণ মিলল কুন্তলের কথাতেই। কারণ, কুন্তল এদিন নতুন কিছুই বলেননি। নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো নিজেই শহিদ মিনারে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘ভাইপো এই করেছি, ভাইপো ওই করেছি, তিন বছর হয়ে গেল, এখনও মুখ দিয়ে অভিষেক নামটা বের হয়নি। মদন মিত্রদের বলা হয়েছিল, অভিষেকের নাম নাও ছেড়ে দেব।’ সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দেন, ‘আমার যদি কোথাও যোগসাজশ থাকে, যদি প্রমাণ করতে পারে, তাতে আমি বলে দিলাম, এখানেই মৃত্যু বরণ করব।’
তবে কুন্তলের গ্রেপ্তারির পর থেকে যতবার প্রকাশ্যে এসেছেন কুন্তল, কারোর না কারোর নাম নিয়েছে, তদন্তে তাঁর বলা নাম জড়িয়েছে একাধিক। সে কালীঘাটের কাকুই হোক কিংবা হৈমন্তী। কুন্তল সংবাদমাধ্যমের কাছেই দাবি করেছিলেন, তাঁরা নাকি সরাসরি দুর্নীতির টাকা ভোগ করেছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্যও। এত কিছুর পর হঠাৎ করেই কুন্তল দাবি করলেন, জোর করে আসলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর মুখ থেকে নেতাদের নাম বার করার চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে কুন্তলের এই নয়া বক্তব্য অভিষেকের বক্তব্যেরই যে রেশ তা বহুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।