‘আমাদের তাড়া দেবেন না। সব বের করব।’ বুধবার তৃণমূলের ছাত্র – যুব সমাবেশ থেকে বাম আমলে ‘ঘুরপথে’ চাকরির সব তথ্য বের করার ব্যাপারে এমন ভাষাতেই হুঁশিয়ারি বার্তার সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশে কোথাও এক আশ্বাসবাণীও দিতে দেখা গেল রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। এরই পাশাপাশি ব্রাত্য এদিন এও জানান, ‘কয়েকজনের নাম প্রকাশ হওয়ায় সিপিআইএম সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে বলছে। পার্টি জানে, কখন সেই তালিকা বের করতে হবে।’ একইসঙ্গে সিপিআইএমকে কটাক্ষ করে ব্রাত্যর সংযোজন, ‘যে কয়েকজনের নাম বেরিয়েছে, তাঁরাই চাইছেন বাকি তালিকা বের হোক। অর্থাৎ, তাদের নাম যেহেতু বেরিয়েছে, তাই বাকিদের নামও বের হোক।’ অর্থাৎ, শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিতে এটাই বুঝিয়ে দেন, এই নাম প্রকাশের ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস ‘ ধীরে চলো ‘ নীতি গ্রহণ করবে। একত্রে কোনও তালিকা বার করা হবে না। ব্রাত্য এদিন বলেন, ‘ যে কটা নাম এখন কড়াইতে ফুটছে, তাঁদের আমরা মাঝে মধ্যে বেসন দেব, তেল ছিটবো, পুড় দেব। ছ্যাঁকা দেব। হাতায় করে তুলবো আবার নামাবো। যে অসভ্যতা সিপিআইএম আমাদের সঙ্গে করেছে, তার জবাব পাবে।’
একইসঙ্গে ব্রাত্য এদিন এও জানান, বাম আমলে চিরকুট চাকরি তথ্য বহিঃপ্রকাশ নিয়ে সরকারি স্তরে কোনও আলোচনা হয়নি বলে দাবি ব্রাত্য বসুর। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন পার্টির একটা বৈঠকে আমাদের দলের সুপ্রিমো দলের শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন সিপিআইএম আমলে যাঁর যাঁর ভুলভাবে চাকরি হয়েছে, তাঁদের তালিকা বের করুন। সিপিআইএম ইচ্ছা করে মিথ্যা বলছে, মুখ্যমন্ত্রী নাকি শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন তালিকা বের করার।’ শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, সরকারি ভাবে এরকম কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা সম্পূর্ণ তৃণমূল কংগ্রেস দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর পূর্বসূরি নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে জেল হেফাজতে। তার মাঝেই গত সরকারের দুর্নীতি নিয়ে সরব বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর সোজা সাপটা হুঁশিয়ারি, এরপরই সিপিআইএমের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী থেকে শুরু করে সিপিআইএম নেতা সুশান্ত ঘোষের পরিবারের সদস্যের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ নিয়ে আওয়াজ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকুটে চাকরি নিয়ে সরব হয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে অন্যান্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নামও। তবে এদিনের শিক্ষা মন্ত্রী বক্তব্য যে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন এক ঝড়ের ইঙ্গিত দিল তা হয়তো বলেই দেওয়া যায়।