দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘আদালত যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে। নথিপত্র খতিয়ে দেখে আদালত মনে করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের জন্য সিবিআইকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।’ একইসঙ্গে আদালতের এও নির্দেশ, ঘটনার পিছনে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ের হামলার ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি ছিল, ঘটনার সিবিআই তদন্ত করানো হোক। আদালতের কাছে তিনি আবেদন করেছিলেন, একজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গাড়িতে যদি এভাবে আক্রমণ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে? সেই যুক্তিতে সিবিআই-এর আবেদন জানানো হয়েছিল। কারণ, মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, রাজ্য পুলিশ যদি তদন্ত করে, তাহলে সঠিকভাবে কারা অভিযুক্ত তা বোঝা যাবে না। এদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষের বক্তব্য ছিল, তৃণমূলের নয়, বিজেপির সমর্থকরাই প্ররোচনা দিয়েছিল। আর সেই কারণেই একটি হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, সিবিআই দিয়ে তদন্ত করানো হোক। এরপরই মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, ওই হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্য পুলিশকে নিশানা করেন। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নিশীথ প্রামাণিক নিজেও। এমনকী, ঘটনায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেছিলেন তিনি। তাঁর ডাক দেওয়া ‘বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি’ নিয়েও সরব হন নিশীথ প্রামাণিক স্বয়ং। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানায়। রাজ্য সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনিও। নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা করেন তিনি। দিনহাটার অশান্তির ঘটনায় ন’হাটা শহর মণ্ডল সভাপতি অজয় রায়ের পাশাপাশি একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। নিশীথের গাড়ির উপর হামলার এই ঘটনায় বিজেপিকেই অভিযুক্ত করে একটি রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের তরফে দেওয়া হয়।