অয়নের কার্যকলাপ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, দাবি অয়ন জায়া কাকলির

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের কার্যকলাপ নিয়ে এবার মুখ খুললেন অয়ন শীল জায়া কাকলি শীল। তাঁর দাবি, অয়নের এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি, সম্পূর্ণ নির্দোষ। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠে আসা কোম্পানি এবিএস ইনফোজেন, যা অয়ন শীলের কোম্পানি হলেও ডিরেক্টর পদে নাম রয়েছে স্ত্রী কাকলি শীলের। ইডি সূত্রে খবর, ওএমআর কেলেঙ্কারি থেকে বেআইনি নিয়োগের টাকায় সিনেমা তৈরি সবই হয়েছে এই কোম্পানির ছাতার তলায়। এই প্রসঙ্গে অয়ন জায়া তথা এবিএস ইনফোজেনের ডিরেক্টর জানান, ‘আমি ২০০ ভাগ নিশ্চিত হয়ে বলছি আমি এব্যাপারে জড়িত নই। অয়নের ব্যবসার ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। পুরোটাই আমি অন্ধকারে ছিলাম। আমায় ডিরেক্টর হিসেবে রাখা হলেও আমি কিছুই জানি না।’ শুধু তাই নয়, স্বামী অয়ন শীলের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন তা নিয়েও মুখ খুলতে দেখা যায় অয়ন জায়া কাকলিকে। তাঁর দাবি, দীর্ঘ আট থেকে দশ বছর তিনি ও অয়ন শীল একসঙ্গে থাকেন না। এমনকী তাদের পাশাপাশি কোনও ছবিও পর্যন্ত শেষ আট বছরে তোলা হয়নি। এই প্রসঙ্গে শনিবার অয়ন জায়ার সংযোজন, ‘গত চার বছর তো আমি নিজেই দিল্লিতে থাকি। তার আগে থেকেই কলকাতা ছাড়ার চার বছর আগে থেকেই আমরা আলাদা থাকি। ও কনস্ট্রাকশন সাইটেই থাকত। এদিকে আমি বাড়িতে ঘর সংসার সামলাতাম। কিন্তু একসঙ্গে না থাকলেও যোগাযোগ ছিল না তা নয়।’
নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করার সঙ্গে সঙ্গে ছেলের নামে পেট্রল পাম্পে সহ সম্পত্তি থাকা নিয়েও মুখ খুলতে দেখা যায় কাকলিকে। এই প্রসঙ্গে অয়ন জায়া এও জানান, ‘ছেলে এসবের কিছুই জানে না। ও তো পড়াশুনা করছে। অভিষেককে হয়তো ওর বাবা সই করতে বলেছে ও করে দিয়েছে। তবে পার্টনারশিপে পেট্রল পাম্প কিনেছে সেটা শুনেছিলাম।’
এদিকে অয়ন শীলের নামের সঙ্গে মডেল অভিনেত্রী এবং পুরসভা কর্মী শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় অয়ন জায়া জানান, ‘অয়ন ও শ্বেতার কথা প্রথমে জানতাম না। অনেক পরে জেনেছি। আগে জানলে হয়তো আরও বেশি করে বাধা দিতে পারতাম। কিন্তু যখন জেনেছি, তখন আর কিছু করার নেই।’
এদিকে সূত্র বলছে, কামারহাটি পুরসভার পুর ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন অয়ন। শ্বেতাকে ৪০ লাখের একটি হন্ডা সিটিও দিয়েছিলেন অয়ন। সে গাড়ির নথিও অয়নের অফিস তল্লাশির সময় পায় ইডি। এদিকে অয়নের পড়শিদের মধ্যে অনেকেই এও দাবি করেন যে, শ্বেতা অয়ন লিভ ইন করতেন। যদিও এই অভিযোগ মানতে রাজি নন শ্বেতা। এদিকে আবার অয়নের সংস্থা বিএস ইনফোজেন -এর হয়ে বিজ্ঞাপন এবং সিনেমাতেও কাজ করেন শ্বেতা। তবে গাড়ি সম্পর্কে শ্বেতার দাবি, ওটা পারিশ্রমিক হিসেবেই পাওয়া। এদিকে কাকলি শ্বেতাকে না চিনলেও শ্বেতার দাবি ঠিক উল্টো। অয়ন শীলের স্ত্রী কাকলি শীলকেও তিনি ভালোভাবেই চিনতেন।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডি-এর হাতে ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীল। যার গ্রেপ্তারির পর নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে শুধু শিক্ষা দপ্তরই নয়, জড়িয়েছে বিভিন্ন পুরসভাও। এদিকে তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের হাতে এসেছে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য, ৩২ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, একাধিক কোম্পানি, বেনামে থাকা নানা স্থাবর সম্পত্তি। এদিকে আবার এই সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তি, কোম্পানিতে রয়েছে অয়ন শীলের স্ত্রী ও ছেলেরও নাম।
এদিকে সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত স্বামী অয়ন শীলের সঙ্গে দেখা করতে শনিবার সিজিও কমপ্লেক্সে যান অয়ন পত্নী কাকলি শীল। যদিও নিয়ম না থাকায় এদিন অয়নের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =