নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নাম জড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের এক স্কুল শিক্ষকেরও। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী এই নিয়ে অভিযোগ করতেই এই ঘটনা জনসমক্ষে আসে। করেছেন। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত দীপক জানা বিচুনিয়া জগন্নাথ বিদ্যামন্দিরের ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ২০১৮ সাল থেকে এখনও অবধি চাকরি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি। আর এই টাকা তিনি নিয়েছেন গ্রুপ সি, ডি, প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদ ছাড়াও যে কোনও সরকারি দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে। একইসঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেও কোনও সুরাহা হয়নি। এই অভিযোগ জানার পরই এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের অনুমতি দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। আদালতের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতেই গিয়েছে। তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগে বেলাগাম দুর্নীতি সামনে এসেছে। আদালতের রায়ে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ সি, ডি সহ একাধিত ক্ষেত্রে কর্মরত অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা।
এদিকে আবার বেনিয়মে পাওয়া চাকরি হারানোর পর অনেকের সমস্যার মধ্যে পড়েন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি হারান ৮৪২ জন কর্মী। সম্প্রতি তাঁদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আলিপুর আদালত চত্বরে এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেন, ‘যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। তবে দয়া করে ছেলেমেয়েগুলোর চাকরি খাবেন না। ওরা কোনও দোষ করেনি। দরকার হলে আমাকে মারুন, কিন্তু ওদের চাকরি খাবেন না।’ এমনকী চাকরিহারাদের পুনরায় সুযোগ দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে গ্রুপ সি-র চাকরিহারাদের আবেদন শুনতে রাজি হয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। গ্রুপ সি- শূন্য পদে নিয়োগের নির্দেশ দেয় আদালত। এদিকে কাউন্সেলিংয়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন চাকরিহারা প্রার্থীরা। কিন্তু, তাতে স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত।