সালটা ২০০১। কলকাতার দুর্গাপুজো ঘিরে তখন এক নিঃশব্দে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে থিমের প্যান্ডেল আর প্রতিমা বানানোর। সে বছরই বোসপুকুরে ভাঁড়ের প্যান্ডেল বানিয়ে শহরজোড়া খ্যাতি পেয়েছিলেন শিল্পী বন্ধন রাহা। সেই বন্দন রাহা মাত্র ৫৪ বছর বয়সে কলকাতাবাসীকে ছেড়ে পাড়ি জমালেন পরপারে। বন্ধনবাবুর পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার আত্মঘাতী হন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। তারই জেরে অবশেষে চরম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেন তিনি। এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে, সম্প্রতি বাগুইআটির জগৎপুরে দাদার বাড়িতে থাকতেন বন্দনবাবু। সেখানেই ঘটে যায় দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনা। এই প্রসঙ্গে বন্দন রাহার দাদা জানান, ‘ছ’ মাস আগে ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। তারপর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল। আমি আর আমার স্ত্রী ওকে চোখে চোখে রাখতাম।’ এরই রেশ ধরে তিনি এও জানান, মঙ্গলবার তিনি তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে অর্থাৎ বন্ধনবাবুর বউদিকে ট্রেনে তুলতে বের হন। বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল বন্ধনবাবুর বউদির। যাওযার সময় দেখে যান ভালো আছে। সব কিছুই স্বাভাবিক। এরপর ফিরে এসে আর বাড়ি ঢুকতে পারছিলেন না। কারণ দরজা খুলছিলেন না তিনি। বারবার ওকে ফোন করার পর অন্য উপায়ে বাড়িতে ঢুকে নজরে আসে তিনি গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন। এ প্রসঙ্গে বাগুইআটি থানার পুলিশ আধিকারিকরা জানান, প্রাথমিকভাবে একটি আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাহা পরিবার সূত্রে খবর, ২০২২-এর পুজোতেও থিমের কাজ করেন বন্ধন রাহা। কিন্তু, তাঁকে গ্রাস করেছিল অবসাদ। প্রবল টেনশনের কারণে ডায়াবেটিসের শিকার হন। এদিকে বন্ধনবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও অশান্তিতে ছিলেন তিনি। একসময় প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। রাহা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার জেরে স্ত্রী ডিভোর্স ফাইল করেন। সেই মামলা চলার ফলে আইনি সমস্যাতেও জড়িয়ে যান বন্ধন। তবে বন্ধনের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শিল্পী মহল।