লন্ডনের পর সান ফ্রান্সিসকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় কনসুলেটে ঢুকে তাণ্ডব চালাতে দেখা গেল খালিস্তানপন্থীদের। একইসঙ্গে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন ‘অমৃতপাল সিংয়ের মুক্তি চাই’। ভারতীয় কনসুলেটে সেই হামলার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ভিডিয়োতে নজরে আসে, যে লাঠিতে বাঁধা আছে খালিস্তানি পতাকা তা দিয়ে কনসুলেটের জানলা-দরজার কাচ ভাঙার দৃশ্যও। এখানেই শেষ নয়, একইসঙ্গে কনসুলেটের দেওয়ালে বিভিন্ন রঙের স্প্রে দিয়ে স্লোগান লেখা হয় ‘ফ্রি অমৃতপাল’।
সান ফ্রান্সিকোর আগে লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে ঢুকে জাতীয় পতাকা নামিয়ে দেন খালিস্তানপন্থীরা। সেই ঘটনার উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কূটনীতিবিদকে তলব করে মোদি সরকারের বিদেশমন্ত্রক। তাঁর কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়। রবিবার এই নিয়ে বিবৃতি দেয় সাউথব্লক। সাউথ ব্লকের এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রিটিশ কূটনীতিবিদকে ভিয়েনা কনভেনশনের মৌলিক নিয়ম-কানুনগুলি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ পাশাপাশি, হাই কমিশনের দপ্তরে কর্মরত ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে ব্রিটিশ সরকার যে উদাসীন, তাও এদিনের এই বিবৃতিতে স্পষ্ট করে দেয় বিদেশমন্ত্রক। স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়, ‘এই উদাসীনতাকে কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।‘
প্রসঙ্গত, গত শনিবার থেকে খালিস্তানপন্থী নেতা তথা স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপাল সিংকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। সেই কারণে পঞ্জাবের সাতটি জেলায় চালানো হয় লাগাতার তল্লাশি অভিযান। শনিবার জলন্ধরে অমৃতপালের নাগালও পেয়েগিয়েছিল পুলিশ। তবে উর্দিধারীদের চোখে ধুলো দিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয় সে। তখনই ন অমৃতপাল গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে খবর ছড়ায়। যদিও পরে পঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, অমৃতপাল পলাতক। অমৃতপালের গ্রেপ্তারির ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিদেশে বিক্ষোভ শুরু করে খালিস্তানপন্থীরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ছাড়াও কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসে। এদিকে আবার অমৃতপালের আইনি উপদেষ্টার অবশ্য দাবি ভুয়ো এনকাউন্টারে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যা পুরোপুরি অস্বীকার করা হয় পঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে।
এদিকে পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে খবর, গত দু’দিনে অমৃতপালের শতাধিক অনুগামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ। এছাড়াও মিলেছে বিপুল টাকা ও অমৃতপালের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি গাড়ি। পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার জলন্ধরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন অমৃতপালের কাকা ও গাড়ির চালক। এদিকে অশান্তির আশঙ্কা পঞ্জাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছে প্রশাসন।