সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে বাংলা শিক্ষিকার চাকরি ফেরাল স্কুল

চাপের মুখে পড়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিতাড়িত শিক্ষিকাকে পুর্ননিয়োগের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষার পাঠ স্কুলে চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল আড়িয়াদহের ‘হোলি চাইল্ড’ স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষার অস্তিত্ব নেই’, এই মর্মে চিঠি দিয়ে বাংলা ভাষার শিক্ষিকাকে ছাঁটাই করে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহের ‘হোলি চাইল্ড’-কে। একইসঙ্গে এই ইস্যুতে ঝড় ওঠে সোশাল মিডিয়ায়। এর পাশাপাশি এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়, একটি বাংলা ভাষা প্রেমী সংগঠনের পক্ষ থেকেও। পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখানো হয় স্কুলেও।
হোলি চাইল্ডের এই ঘটনায় রাজনীতিবিদ থেকে শিক্ষাবিদ সবাই একসুরে গলা মিলিয়ে বলেন, মাতৃভাষা বাংলা, অথচ এই রাজ্যের এক স্কুলে ‘বাংলা ভাষার কোনও অস্তিত্ব নেই’। সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় আড়িয়াদহ নওদাপাড়া হোলি চাইল্ড স্কুল-এর টার্মিনেশন লেটার। তারই জের পড়ে সোমবার স্কুল খুলতেই। স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাংলাভাষা প্রেমী এক সংগঠন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তারা, এমনটাই স্থানীয় সূত্রে খবর। পরিস্থিতি এতোটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বেলঘড়িয়া ও দক্ষিণেশ্বর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছায়। সোশাল মিডিয়ার ধিক্কার ও এই বিক্ষোভের জেরে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, বাংলা ভাষার শিক্ষিকাকে স্কুলে ফের ফিরিয়ে নেওয়া হবে এবং স্কুলে বাংলা পড়ানোও অব্যাহত থাকবে। প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষার শিক্ষিকাকে অপসারিত করার চিঠিতে কর্তৃপক্ষের ভুল ইংরাজি নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের ইংরাজির তর্জমা করলে দাঁড়ায়- ‘বাংলা ভাষার কোনও অস্তিত্ব নেই।’ এতে আরও তীব্র হয়েও ওঠে বিতর্কের আগুন। কিন্তু, ওই ইংরাজির ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘স্টুডেন্ট’ শব্দটি ভুলবশত বাদ চলে গিয়েছিল। আসলে বলতে চাওয়া হয়েছিল, ‘বাংলা ভাষার ছাত্র একেবারেই কম।’
উল্লেখ্য, সব স্কুলে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক হবে বলে ২০১৭ সালে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন। ভারতের সব রাজ্যের স্কুলে সেই রাজ্যের ভাষা পড়ানো বাধ্যতামূলক। তবু এ রাজ্যে ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে অবহেলিত বাংলা ভাষা তা বহুদিনের অভিযোগ। আড়িয়াদহ নওদাপাড়া হোলি চাইল্ড স্কুল-এর ঘটনায় তা আবারও সামনে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 4 =