নিয়োগ দুর্নীতিতে আবার নতুন এক অধ্যায় সামনে এল সোমবার। ডাই ইন হারনেসে ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার ফোর্সে নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। অর্থাৎ জ্যান্ত মানুষকে মৃত বানিয়ে চাকরি। এই কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্ত চেয়ে বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলাটি দায়ের করেন।
বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের অভিযোগ, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এনভিএফে বেআইনি নিয়োগের বহু ঘটনা সামনে এসেছে।ডেথ সার্টিফিকেট, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড জাল করে হয়েছে নিয়োগ। এই প্রসঙ্গে এনভিএফের রাজ্য কমান্ড্যান্ট কুণাল আগরওয়াল অবশ্য জানান, ‘আমি সদ্য এই পদে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’ প্রসঙ্গত, রাজ্যে এই ঘটনা প্রথম নজরে আসে ঝাড়গ্রামের শিরসিতে। ২০১৮-য় শিরসির বাসিন্দা, এনভিএফের প্রাক্তন কর্মী ধৃতিভানু পাল জেলা প্রশাসনকে জানান, তাঁকে ‘মৃত’ দেখিয়ে তাঁর মেয়ে হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে একজন মহিলা ডাই ইন হারনেসে চাকরি পেয়েছেন। এমনকী তাঁর ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেটও বের করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, আদালতে পেশ করা মামলায় এই রকমের বহু ঘটনা প্রামাণ্য নথি-সহ উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকী, ২০২০-তে পশ্চিম মেদিনীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার কল্যাণীর এনভিএফ ডিরেক্টরেটের ডেপুটি রাজ্য কম্যান্ডান্ট তথা তদন্তকারী আধিকারিককে একটি চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, যে মহিলা নিজেকে ধৃতিভানুর মেয়ে হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন, তাঁর কোনও নথির সত্যতাই ডিআইবি-র সংশ্লিষ্ট ইনস্পেক্টর যথাযথ ভাবে পরীক্ষা করেননি। ওই ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করেছিলেন এসপি।
এরই পাশাপাশি আইনজীবী তরুণজ্যোতি আরও জানান, এমন ঘটনাও নজরে এসেছে যেখানে ভুয়ো প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বা সংশ্লিষ্ট পুরসভার দেওয়া ক্যারেক্টর সার্টিফিকেটেও ভুয়ো। রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের কথায়, ‘এসএসসি, পিএসসিতে নিয়োগ দুর্নীতির খোঁজ মিলেছে। এ বার জ্যান্ত মানুষকে মরা বানিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনাও সামনে এল।’ এদিকে সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে রাজ্যের অসামরিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাভেদ খানকে ফোন করে, এসএমএস পাঠিয়েও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।