প্রোমোটিংয়ের কাজ করলেও অয়ন শীলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ২০১৪-র পাশাপাশি ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের তালিকাও, এমনটাই খবর ইডি সূত্রে। রবিবার রাতে ধৃত বহিষ্কৃত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এই গ্রেপ্তারির আগে অয়নের সল্টলেকের অফিসে ৩৭ ঘণ্টার ম্যারথন তল্লাশি চালানো হয় ইডি-র তরফ থেকে। সেখান থেকে প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করেন ইডি আধিকারিকরা। বাজেয়াপ্ত নথি যাচাই করে ইডি-র তরফ থেকে এমনটাই জানানো হয়।
এই নথি হাতে আশার পর থেকেই ইডির আদিকারিকদের ধারনা, শুধু ২০১৪ সালের নয় ২০১২ সালের প্রাইমারি টেটেও সক্রিয় ছিল এই চক্র। জানা গিয়েছে, অয়নের অফিসে অনেকগুলি কম্পিউটার ছিল। সেই কম্পিউটার থেকে ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার্থীদের তালিকা মেলে। ইডি-র আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সেখানে ‘টেট ২০১২’ বলে একটি ফোল্ডার ছিল। সেই ফোল্ডার ঘেঁটে রীতিমতো চমকে ওঠেন ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকে ২০১২ টেট পরীক্ষার্থীদের তালিকা উদ্ধার করা হয়। এই ব্যাপারে অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে ইডি সূত্রে খবর।
এরই পাশাপাশি ইডি সূত্রে খবর, অয়নের অফিসের নথি থেকে রাজ্যজুড়ে নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের ২০ জন এজেন্টের হদিশ মিলেছে। তাঁদের সকলের নাম ও অন্যান্য তথ্য ইডির হাতে এসেছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলাজুড়ে সক্রিয় ছিল এই এজেন্টরা। এরাই বিভিন্ন সময় টাকা ও পরীক্ষার্থীদের নথি পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, এই প্রত্যেক এজেন্টকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত নথির পাশাপাশি বিভিন্ন পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের ধারনা, পুরসভাগুলির নিয়োগেও টাকার লেনদেন হয়ে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নেমে কুন্তল ঘোষের পর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গ্রেপ্তারির পরই হুগলির বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিশাল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে বালি খাদান থেকেও টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। এরপর শান্তনুকে জেরা করে অয়নের হদিশ পায় তদন্তকারী। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছেন, অয়নের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করত। অয়নের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ৫০-৬০ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ মেলে।