তৃণমূল থেকে বহিষ্কার কুন্তল ও শান্তনু

নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার আরও দুই নেতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ তৃণমূল কংগ্রেসের। কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করা করা হল তৃণমূল থেকে। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দলের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তাঁকে দলের সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার একই পদক্ষেপ নেওয়া হল কুন্তল শান্তনুর ক্ষেত্রেও। মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে দল থেকে কুন্তল এবং শান্তনুকে এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী শশী পাঁজা ও ব্রাত্য বসু।

নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের একের পর এক নেতার নাম জড়ানো প্রসঙ্গে শশী পাঁজা এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে এও জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে বহু রাজনৈতিক দল জড়িত। বহু নেতা বিধানসভায় প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন তোমায় জেলে ভরে দেব। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস কোনও দুর্নীতি সহ্য করে না। আমরা সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। কুন্তল ও শান্তনুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ এরই পাশাপাশি বিজেপিকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি মন্ত্রী শশী পাঁজা। প্রশ্ন তোলেন, বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে শশী পাঁজা এও জানান, ‘দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ১ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া গিয়েছে। সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো শুভেন্দু অধিকারী বহাল তবিয়তে ঘুরে বেরাচ্ছেন।’

এদিন শশী পাঁজার মতোই একই অনুরণন ধরা পড়ে মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গলাতেও। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, , ‘আমাদের অপরাধ, আমরা তিনবারের নির্বাচিত সরকার। আপনারা হয়তো আরও তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করবেন। করুন, কিন্তু বিজেপি নেতাদের একবারও ডাকবেন না? নারদা ও সারদা কোনও ট্রায়াল এখনও হয়নি।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘যে তথ্য তুলে ধরছি, তা কেন ইডি সিবিআই -এর নজরে আসছে না? খনির মধ্যে কী আছে আমরা জানতে চাই।’

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে এ দাবিও করেন, ১৫-২০ জন বাতিল হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সঙ্গে তৃণমূলের যেমন যোগাযোগ ছিল, তেমনই সিপিএম ও বিজেপিরও আছে। একটি নির্দিষ্ট পার্টি একটি নির্দিষ্ট সংস্থা চালাচ্ছে, যাতে একটা নির্দিষ্ট পার্টিকে ছোট করা যায়। কেউ তৃণমূল কংগ্রেস করেন, তাই তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত, এই রকম একটা বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। আর তা করানো হচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা মারফত। এরই রেশ ধরে এ প্রশ্ন তোলেন ব্রাত্য যে, পাসপোর্ট রিনিউ করা হলে কি তা দুটো পাসপোর্ট বলা যায়, এমন প্রশ্নও এদিন তোলেন ব্রাত্য। সঙ্গে এ প্রশ্নও রাখেন, ‘শাসক দল হওয়াটাই কি আমাদের অপরাধ?’

একইসঙ্গে এদিন ব্রাত্য এও জানান, ‘বিধানসভায় হুমকি শোনার পর এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে কারা ইডি সিবিআই চালাচ্ছে। যে বিরোধিতা করছে তার বাড়িতেই ইডি সিবিআই পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করছি। আমরা অসহায় বোধ করছি।’ সঙ্গে প্রত্যয়ের সঙ্গে ব্রাত্য এও জানান, ‘আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও আগের সব নির্বাচন যেমন জিতেছি, পঞ্চায়েতেও জিতব।‘

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − six =