মুকুল রায় ইস্যুতে ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কারণ, মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন এমনটাই জানিয়েছিলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘মুকুল রায়কে নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আমরা কলকাতা হাইকোর্টে সোমবার একটি মামলা দায়ের করেছি। যাতে একটি বেঞ্চে শুনানি হয়ে এর দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছি। সংবিধানের দশম কাউন্সিলের নিয়ম কার্যকর করেন না এই বিধানসভার অধ্যক্ষ। আইনি লড়াইকে তরান্বিত করা এবং সুপ্রিম কোর্টের নিয়মকে মান্যতা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমি সশরীরে এসে বিচারপতিকে সবটা জানালাম।’ এরই পাশাপাশি কৃষ্ণ কল্যাণীর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতেও হাইকোর্টে আরও একটি মামলা করেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ১১ জুন তৃণমূল ভবনে গিয়ে যান স্বপুত্র মকুল রায়। এমনকী এই অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বলেই দাবি করা হয় বিজেপির তরফ থেকে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেন। সেই সময়ই দলত্যাগ আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দু এই আর্জি ধোপে টেকেনি। এরপরই দেখা যায় বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয় মুকুলকে। রীতি অনুসারে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় বিরোধী দলের নেতাকেই। এরপর থেকেই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের শুরু। এদিকে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় গত জুনে দীর্ঘ শুনানির পর জানান, মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেন তিনি। এরপরই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রায় পুনর্বিবেচনা করতে বলে হাইকোর্টে যান বিরোধী দলনেতা। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে ফের শুনানি হয়। কিন্তু, তাতেও মুকুলের বিধায়ক পদ বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদনে বিধানসভায় ৫ দফায় শুনানি হয়েছিল। কিন্তু, প্রতিবারই অধ্যক্ষ তাঁকে বিজেপি-র বিধায়ক হিসেবেই উল্লেখ করা হয়।
এরপর সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায়। মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফলে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারেই শুভেন্দু সোমবার এই ইস্যুতে আবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু।