হোলির দিন ফের একবার ন্যায্য চাকরির দাবিতে রাজপথে মিছিল করলেন চাকরিপ্রার্থীরা। শিয়ালদা থেকে মেয়ো রোড পর্যন্ত যায় এদিনের এই মিছিল। আদালতের নির্দেশ ছিল, কোনও ধরনের রাজনৈতিক পতাকা স্থান পাবে না এই মিছিলে। একইসঙ্গে এই মিছিল করার জন্য় বেধে দেওয়া হয়েছিল সময়ও। তবে এদিনের এই মিছিলে ছিল কিছু অভিনবত্ব।
শিয়ালদা থেকে মেয়ো রোডের গান্ধি মূর্তি পর্যন্ত এদিনের এই মিছিলে লেন এসএলএসটি-র ২০১৬ সালের নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা ছাড়াও ছিলেন ডিএ নিয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীরা। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কালো পোশাক পরে সকলে মিছিলে পা মেলান। এই মিছিল থেকে কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয় কবে কাটবে তাঁদের বেকারত্বের জ্বালা তা নিয়েই। এর মধ্যে একজন সাজেন কুম্ভকর্ণ। তাঁকেই দেখানো হয় রাজ্য সরকারের প্রতীক হিসেবে। তার কানের সামনে বাজানো হতে থাকে কাঁসর ঘণ্টা। এমনই এক অভিনব প্রতীকী প্রতিবাদ হোলির দিন প্রত্যক্ষ করলেন তিলোত্তমা বাসী।
অন্যদিকে, মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ-ডি-র চাকরিপ্রার্থীরাও ধরনা অবস্থানে রয়েছে। ২০০ দিন পার করেছে তাঁদের অবস্থান। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাঁদের দাবি, “আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চাই না। আমরা ন্যয্য চাকরি চাই। দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষার পরও এখনও নিয়োগ হয়নি। নারী দিবসে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই নিয়োগের আর্জি জানাচ্ছেন আন্দোলনরতরা। স্থায়ী সমাধানের দাবিতে এদিন সুর চড়ান এই এসএসসির চাকরিপ্রার্থীরা।
আন্দোলনকারী সরকারি কর্মী সমরেন্দ্রনাথ রায় এদিন ধরনামঞ্চেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ২৭দিন ধরে অনশন করছেন সরকারি কর্মীরা। ৪১ দিনে পড়েছে ৩৬টি সংগঠনের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবস্থান বিক্ষোভ। তার মধ্যেই একজন আন্দোলনকারীর ধরনামঞ্চে সংজ্ঞা হারানোর ঘটনা ক্ষোভ আরও বাড়াচ্ছে বলেই মনে করছেন সকলে। যতক্ষণ না সরকার বকেয়া ডিএ যেদিন মিটিয়ে দেবে , সেদিন আবার দোল খেলা হবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ‘আমাদের মোটেই ভালো লাগছে না। দোল উৎসবের দিন পরিবার পরিজন ছেড়ে বকেয়া ডিএ-র দাবিতে, ন্যয্য প্রাপ্যের দাবিতে অনশনে বসেছেন সরকারি কর্মচারিরা। আমরাও এর শেষ দেখে ছাড়ব। শপথ নিচ্ছি, যেদিন আমাদের দাবি পূরণ হবে, সেইদিন আমরা দোল খেলব। বিজয় উৎসব পালন করব।’