আসানসোল সংশোধনাগার থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লির পথে অনুব্রত

দোলের দিন সকালেই অনুব্রত মণ্ডলকে কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য রওনা দিল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের একটি দল। এরপর জোকা ইএসআই-এ হবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট সব ঠিক থাকলে তাঁকে তুলে দেওয়া হবে ইডি-র হাতে। সেখানে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার পর তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে বিশেষ বিমানে। জানা যাচ্ছে, দিল্লি গিয়েও আরও একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে তাঁর। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে জোকা ইএসআই-এর রিপোর্টের ওপর।

মঙ্গলবার সাত সকালে আসানসোল জেল থেকে কলকাতার উদ্দেশ্য রওনা দেন অনুব্রত। কথা ছিল সকাল ছটার সময় তাঁর আসানসোল সংশোধনাগার  থেকে বের হওয়ার। তবে তা হয়নি। মিনিট ৪৫ বাদে পুলিশ পাহারায় ৬ বেজে ৪৫ মিনিটে সংশোধনাগেরের গেট থেকে বাইরে বেরোন। অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছিল মোট ৪ টি গাড়ির কনভয়।যার মধ্যে তিনটি পুলিশের গাড়ি।সঙ্গে একটি আসানসোল জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স। ছিলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ও একজন স্বাস্থ্য কর্মীও। এরপরই সংশোধনাগার থেকে বের হয়েই একটি গাড়িতে উঠে পড়েন অনুব্রত। পরনে এদিন ছিল হালকা সুবজ রঙয়ের পাঞ্জাবি ও সাদা পাজামা। এদিন কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়নি তাঁকে। ঘুরেও তাকাননি চিত্র সাংবাদিকদের দিকেও। বস্তুত বেশ কিছুটা হলেও বিধ্বস্ত ও ক্লান্ত-ই দেখাচ্ছিল অনুব্রতকে।

এদিকে সকালে এগারোটার সময় কলকাতায় জোকা ইএসআই হাসপাতালে অনুব্রতর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা রয়েছে। ম্যাপ বলছে, আসানসোল জেল থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালের দূরত্ব ২৩৮ কিলোমিটার। এদিকে দোল পূর্ণিমা হিসেবে ছুটি থাকায় রাস্তাঘাট এদিন অনেকটাই ফাঁকা থাকার কথা। ফলে সবকিছু ঠিক থাকলে এগারোটা পরে পুলিশের কনভয় অনুব্রতকে নিয়ে কলকাতায় পৌঁছে যাওয়ার কথাও। তবে এদিন আসানসোল সংশোধনাগার থেকে রওনা দেওযার আগেও অনুব্রতর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় জেল কতৃপক্ষের তরফে। আসানসোল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, এদিন তিনি সকালেও চা খেয়েছেন। এরপর জেল সুপারের চেম্বারে কাগজে সইও করেন বলে সূত্রে খবর।

তবে দুর্গাপুর থেকে বর্ধমানের পথে শক্তিগড়ের একটি হোটেলে দাঁড়ায় অনুব্রত মণ্ডলের  গাড়ি। সকালের প্রাতঃরাশ সারার জন্যই নেমেছিলেন সেখানে। কিন্তু তখনও তৈরি হল বিতর্ক। কেষ্ট মণ্ডলের খাবার টেবিলে দেখা গেল সবুজ পঞ্চাবি পরিহিত একজন ব্যক্তিকে। ৯৫৫ টাকা দিয়ে ইনিই মেটান এদিন ছজনের খাবারের বিল।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বিকেলের পর থেকে অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়ার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ও জটিলতা তৈরি হয়। কারা তাকে জেল থেকে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে চলে দড়ি টানাটানি। শেষ পর্যন্ত সকালে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের হস্তক্ষেপে সেই জটিলতা কাটে। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বলে দেন, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির বিবেক চৌধুরীর বিশেষ বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছে, তা মানতে হবে। এও বলা হয় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের পাহারায় জেল কতৃপক্ষ তাকে আসানসোল জেল থেকে কলকাতায় নিয়ে যাবে। সেখানে কোন কেন্দ্রীয় হাসপাতালে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। তারপর জেল কতৃপক্ষ রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে অনুব্রতকে ইডির হাতে তুলে দেবে। এরপর ইডি তাকে বিমানে দিল্লি নিয়ে যাবে ও রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে তুলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 2 =