নিজের সাত বছরের সন্তানকে হত্যা করেছেন নিজে। ফোন করে আত্মীয়কে এমনটাই জানান বাবা নিজেই। এরপরই মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় নাবালকের দেহ। তবে এই ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত বাবা। এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষাী থাকলেন ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দারা। এই ঘটনা জানার পরই পতিবিচ্ছিন্না নাবালকের মা রুকসানা শেখ থানায় প্রাক্তন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে ওই নাবালকের বাবা পলাতক হলেও গ্রেপ্তার করা হয় নাবালকের ঠাকুমা, জেঠু, জেঠিমাকে। এদিকে অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, ঘটনার তদন্তে নিজেই ঘটনাস্থলে যান ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও মিতুন দে৷ তিনি জানান মুল অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দেউলার বাসিন্দা রফিকুল শেখ ও তার স্ত্রী রুকসান শেখের সম্প্রতি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়৷ নির্দিষ্ট কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না রফিকুল বলে পরিবার সূত্রে খবর। ফলে কখনও ভ্যান চালাত, আবার কখনও রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করত রফিকুল, এমনটাই জানান প্রাক্তন স্ত্রী রুকসানা। মাঝেমধ্যে ক্ষেত মজুরের কাজও করত। অভাবের সংসারে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত বলেও অভিযোগ। আর এই অশান্তির জেরে নিয়মিত মারধর করা হত বলে জানান রুকসানা। আর এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। সম্প্রতি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। দুজনের একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান হয়। আদালত দু’জনেরই কাস্টডি দেয় রুকসানকে। কিন্তু জোর করে ছেলেকে তাদের কাছে রাখা হয় বলে দাবি রুকসানার।
এদিকে রোজগারের প্রয়োজনে কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করতেন রুকসানা। রুকসানার অভিযোগ, সাত বছরের রোহিত শেখের উপরেও অত্যাচার করা হত। বাবার পাশাপাশি, ছেলেটির ঠাকুমা, জেঠু ও জেঠিমাও নাবালককে মারধর করতো বলে অভিযোগ। এরপর শনিবার রাতে নিজের হাতে ছেলেকে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দেয় রফিকুল। এমনটা জানাচ্ছেন স্থানীয়রাও। ঘটনায় রুকসান শেখ উস্থি থানায় তার প্রাক্তন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। তার ভিত্তিতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ রোহিত শেখের দেহ রবিবার ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোও হয় বলে জানান ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও মিতুন দে।