২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে জোট গড়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। লক্ষ্য ছিল বিজেপিকে ত্রিপুরা থেকে ক্ষমতাচ্যূত করার। তবে এই জোট উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে বিজেপির দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা আটকাতে পারেনি। কিন্তু ভোটপর্ব মিটে গেলেও ত্রিপুরার রাজ্য রাজনীতিতে যে বজায় থাকবে বাম-কংগ্রেসের জোট, এমনটাই খবর সূত্র মারফত। আর এই বার্তা দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। কারণ, ত্রিপুরার সিপিএম মনে করেছে, এখনই জোট ভাঙলে তা নিয়ে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। ত্রিপুরাবাসীর কাছে সিপিএমের ভূমিকা হাস্যকর হয়ে যেতে পারে। এই সব কথা মাথায় রেখেই যৌথ ভাবেই এগিয়ে যেতে চান কংগ্রেস এবং সিপিআই নেতৃত্ব।
পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, আগামী দিনে বিভিন্ন কর্মসূচি একসঙ্গেই পালন করবে বাম-কংগ্রেস জোট। বিধানসভার ফল প্রকাশের পর থেকেই ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসা ছড়ায় বলে অভিযোগ করা হয় বিজেপি বিরোধী শিবির থেকে। এই হিংসা বন্ধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করতে ত্রিপুরার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে আর্জি জানাবে বাম-কং জোট, এমনটাও জানা যাচ্ছে। রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা সেরে ফেলেছেন দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রে খবর, ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর শনিবারেই প্রথম সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক করে ত্রিপুরা রাজ্য সিপিএম। শনিবারের সেই বৈঠকেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়। সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠকে জোট হিসাবে বিরোধিতার প্রস্তাব গৃহীতও হয়।
এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান, ‘গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একসঙ্গে নিয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই ভোটেই সেই লড়াই শেষ হয়নি। তাই গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই একসঙ্গেই চলবে।‘ এদিকে ত্রিপুরা কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অজয় কুমার জোটের প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মাঝেও মধ্যে বাম এবং কংগ্রেসের প্রার্থীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। আমাদের সংগঠনে কোথাও কোথাও দুর্বলতা ছিল। সেগুলো খুঁজে বের করে মেরামত করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, এ বছরই প্রথমবার জোট গড়ে ত্রিপুরায় লড়াই করে বাম ও কংগ্রেস। এই জোট ১৪টি আসন জিতেছে। এর মধ্যে বামফ্রন্ট জিতেছে ১১টি আসনে এবং কংগ্রেস জিতেছে ৩টি আসনে। জোট করেও গত বারের থেকে পাঁচটি আসন কমেছে বামেদের। যদিও কংগ্রেসের তিনটি আসন বেড়েছে। ৩৩টি আসন নিয়ে ত্রিপুরার ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। যদিও গত বারের থেকে তাঁদের ১১টি আসন কমেছে। অন্য দিকে তিপ্রা মোথা জয়ী হয়েছে ১৩টি আসনে।