বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের হেনস্থা করতে সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজনীতিক যাঁরা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠানো হল বিরোধী শিবির থেকে। এই যৌথ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসি রাও, আরজেডি নেতা ও বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, ইউবিটি নেতা উদ্ধব ঠাকরে, জেকেএনসি নেতা ফারুক আবদুল্লা এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। অর্থাৎ, দেশের ৯টি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে এই চিঠি গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
মূলত এই চিঠিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ-ই আনা হয়েছে। একইসঙ্গে মণীশ সিসোদিয়ার গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয় এই চিঠিতে। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো নেতারা বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর কী ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেই প্রশ্নও তোলা হয় এই চিঠিতে, এমনটাই সূত্রে খবর।
একইসঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া বিরোধীদের সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘ভারত যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আশা করছি এ ব্যাপারে আপনি সহমত হবেন। কিন্তু বিরোদীদের উপরে কেন্দ্রীয় সংস্থার নির্লজ্জ অপব্যবহারের জেরে মনে হচ্ছে আমরা গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে চলেছি।’
এর পরই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা যাঁরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত তদন্ত বন্ধ হয়েছে সেই অভিযোগও তোলা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম। নারদা মামলায় অভিযুক্ত হলেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে রয়েছে মুকুল রায়ের নামও। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছিল ইডি ও সিবিআই। কিন্তু কংগ্রেস শিবির ছেড়ে বিজেপিতে যেতেই তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত তদন্ত বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এর পাশাপাশি আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব, সমাজবাদী পার্টির আজম খান, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত, এনসিপি-র নবাব মালিক, তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে কী ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে সেই অভিযোগ তোলা হয় এই চিঠিতে।