এবার থেকে পুলিশের কনস্টেবল পদে আবেদন করতে পারবেন রূপান্তরকামীরাও। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বুধবার এমনটাই জানান রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। একইসঙ্গে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী এও জানান, এঁদের কনস্টেবল পদে রাজ্য পুলিশের নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বুধবার রবীন্দ্র সদনে ট্রান্সজেন্ডারদের পরিচয় পত্র ও সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী শশী পাঁজা আরও জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী কনস্টেবল নিয়োগের একাধিক নিয়ম তৈরি করেছেন। সেই নিয়মের মধ্যে থেকেই ট্রান্সজেন্ডাররা এবার থেকে লেডি কনস্টেবল পদে আবেদন করতে পারবেন। শীঘ্রই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। রাজ্য সরকারের তরফে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে।’ প্রসঙ্গত গত বছরই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল পুলিশের রূপান্তরকামীদের চাকরিতে সুযোগের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার তা কার্যকরী হল। ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী বিশেষ বিধি তৈরি করেছে রাজ্য।
এদিকে রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরিতে মহিলাদের ক্ষেত্রে যে সংরক্ষণ রয়েছে, তার মধ্যে এক শতাংশ থাকবে রূপান্তরকামীদের জন্য। যে শারীরিক ক্ষমতা পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার ক্ষেত্রে মাপকাঠি হিসাবে নির্ধারিত হয়,সেটি রূপান্তরকামীদের জন্য ভিন্ন ভাবে মূল্যায়ন হবে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, উচ্চতা কিংবা অন্যান্য শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে কম এবং মহিলাদের থেকে বেশি হবে রূপান্তরকামীদের জন্য। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে রূপান্তরকামীদের জন্য। কারণ বর্তমানে আর্থ সামাজিক পরিস্থিতিতে এমন অনেক রূপান্তরকামী রয়েছেন, যাঁরা স্কুলে যাওয়ারও সুযোগ পর্যন্ত পান না।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে নালসা রায় দেয় শীর্ষ আদালত। রূপান্তরকামীদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বলে মর্যাদা দেওয়া হয়। পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, সংবিধানে নাগরিকদের জন্য যে মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে, তা তৃতীয় লিঙ্গের জন্যও সুনিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে তাঁদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। ফলে শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পর, নিঃসন্দেহে এটি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রশংসনীয় পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন রাজনীতিবিদরা।