‘রাজ্যপাল সবার। কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নয়। যদি কোনও কিছু থেকে থাকে, তা অতীত। এটি নতুন সময়।’রাজ্যপালকে পাশে নিয়ে এমনই বার্তা দিতে দেখা গেল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মঙ্গলবার এই বৈঠকের পর রাজভবনের বাইরে রাজ্যপালকে পাশে নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও। এই তালিকায় ছিলেন নেতাজি সুভাষ বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বারাসত স্টেট ইউনিভার্সিটি, সিধু-কানহো বিশ্ববিদ্যালয় সহ মোট সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের। এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘উপাচার্যরা প্রত্যেকে রাজ্যপালের হাতে একটি করে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং রাজ্যপাল তাঁদের তিন মাসের এক্সটেনশন দিয়েছেন। এখন এরা প্রত্যেকেই বৈধ উপাচার্য।’ একইসঙ্গে ব্রাত্য বসু এদিন এও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যাতে কোনও সংঘাতের আবহ তৈরি না হয়। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও মনে করেন, এই পন্থাতেই এগোনো উচিত। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী এও জানান, বুধবার বেশ কিছু উপাচার্য এসে একইভাবে রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের এক্সটেনশন নেবেন।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও জানান, শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও দ্বন্দ্বের জায়গা থাকা উচিত নয়। বললেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য বাংলার পরিচয় সর্বত্র ছিল। সেই যুগকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আরও নজর দেব। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল তুলে আনেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাও। কারণ মোদি বলেছেন আত্মনির্ভর ভারতের কথা। সেই আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্য পূরণ করতে সবথেকে বড় ভূমিকা হবে শিক্ষার। এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জন্য কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। উপাচার্যরা তাই নিজে থেকে এগিয়ে এসে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সবাই বিজ্ঞ মানুষ। তাই আমি তাঁদের অনুরোধ করেছি, আপাতত তিন মাসের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই সময়ের মধ্যে আইন মেনে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগের কাজ করা হবে।’
এদিকে এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মুখে বার বার শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তিনি যে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনও সংঘাতের আবহ তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে সর্বদা সচেষ্ট, সেই কথা বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেন ব্রাত্য। অন্যদিকে রাজ্যপালের মুখে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যের কথা এবং সেই লক্ষ্য পূরণে শিক্ষার প্রয়োজনের কথা।