এবার ইডি-র নজরে বিভাস অধিকারীও,  চলছে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ তার শিকড় খোঁজার

প্রাথমিকের নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় তাপস মণ্ডলের সঙ্গে বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা বিভাস অধিকারীর বিষয়ে নতুন করে খোঁজখবর শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকেরা। এর আগে কলকাতার বৈঠকখানা এলাকায় বিভাসের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে সিল করে দেওযা হয় ইডি-র তরফ থেকে। এবার তাপস মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের সূত্রে আবারও নজরে সেই বিভাস। বীরভূমে নলহাটির বেশ কয়েকটি বিএড-ডিএলএড কলেজের সঙ্গেও যুক্ত তিনি।

এদিকে অভিযোগ উঠছে, এই সব কলেজের পরীক্ষার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাপস। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও বিভাসের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে দাবি নলহাটির বাসিন্দাদের। সেখানে তাঁর একটি আশ্রমে পার্থ-মানিকদের যাতায়াত ছিল বলেও জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। আর এরই মাঝে নিয়োগ-দুর্নীতির যোগ কতদূর জড়িত তাও  খতিয়ে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এ ব্যাপারে বিভাসকে জিজ্ঞাসবাদ করা হবে বলেও জানা গেছে ইডি সূত্রে। ইতিমধ্যে ‘অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র কর্তা তাপস মণ্ডলের ১২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ়ও করা হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে। সূত্রে এ খবরও মিলছে, মিনার্ভা এডুকেশন সোসাইটি এবং অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশন-সহ তাপসের ওই সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা রয়েছে।

এদিকে ইডি-র গ্রেপ্তারি এড়াতে এর আগে নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন তাপস। তবে তাতে কাজের কাজ হয়নি। সিবিআইয়ের  হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। এবার নজরদারি শুরু হয়েছে অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে। ইডি আধিকারিকরা খতিয়ে দেখতে চাইছেন, নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হতেই তাপস কোথাও টাকা পাচার করেছেন কিনা। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাপসের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।তাপসও নিজে বিএড-ডিএলএড কলেজের মালিক। তার পরেও ১২টি অ্যাকাউন্টে মাত্র সাড়ে আট লাখ টাকা থাকার বিষয়টি মোটেই সঠিক বলে মনে হচ্ছে না ইডি-র আধিকারিকের। কারণ, তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, তাপসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন জনের অ্যাকাউন্ট টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই সব ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

এদিকে দুর্নীতির এই পর্বে বিভাসের নাম নিয়েছেন আর এক অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ। এদিকে আবার নলহাটি এলাকায় তিনি ধর্মীয় গুরু হিসেবেই পরিচিত। একটি আশ্রমও চালান। সেই সঙ্গে তৃণমূলের নলহাটি-২ ব্লকের সভাপতিও ছিলেন। শোনা যায়, ৪-৫টি বিএড-ডিএলএড কলেজের মালিকও বিভাস।এদিকে এবার নলহাটির আশ্রম চত্বরে চারতলা বহুতল ছাড়াও রয়েছে ভেষজ ওষুধের বিশাল কারখানা। তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর। ওই আশ্রমে নেতা-মন্ত্রীদের ঘনঘন আসতেন দেখেছেন বলছেনও স্থানীয়রা। শুধুতাই নয়, কেন্দ্রের শাসকদলের নেতারাও আসতেন সেখানে বলেও জানা যাচ্ছে। নিয়োগ-দুর্নীতিতে নাম জড়ালেও বিভাসের দাবি, “আমার সঙ্গে দুর্নীতির কোনও যোগ নেই। চোর-ডাকতরা বাঁচার জন্যে অনেকের নাম বলে।সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − 3 =