বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হল সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। স্থানীয় সূত্রে খবর, দিনভর ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটদানে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ছাপিয়ে গিয়েছে এবারের উপনির্বাচন। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৩.৪৯ শতাংশ। শেষ পর্যন্ত এই সংখ্যা ৮০ শতাংশ ছাড়াবে বলেই ধারনা জেলা প্রশাসনের।
এদিকে এদিনের এই সাগরদিঘি উপনির্বাচনে ৯ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করেন ২ লাখ ৪৫ হাজার ৮২৫ জন ভোটার। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, লড়াই হবে ত্রিমুখী। অর্থাৎ, কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। ২৪৬ টি বুথে নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয়েছিল ভোট গ্রহণ।এদিনের ভোটগ্রহণের প্রায় শুরু থেকেই যুযুধান এই তিন পক্ষের অভিযোগ, পালটা অভিযোগে সরগরম হয়ে ওঠে সাগরদিঘি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, একটি বুথের ইভিএম পরিবর্তন ছাড়া ভোট দানে সেভাবে সমস্যা হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা বলয়ের মাঝেই সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে সামগ্রিক ভোট পর্ব। তবে ভোট দানের শতাংশের হার দেখে খুশি বিরোধীরা। কারণ, ভোটে বেশি মানুষের অংশগ্রহণের অর্থ অ্যান্টি এস্টাব্লিশমেন্ট ভোটের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়া।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালেই ২১০ ও ২১১ নম্বর বুথে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরিণ বিশ্বাসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থকরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রার্থী বুথের ভিতর ঢুকে ‘দাদাগিরি’ করছেন, ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। বাইরিণ বিশ্বাস জানান, তিনি প্রার্থীর অধিকার বলেই ভিতরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু কাউকে প্রভাবিত করেননি। বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহা ১৪০ ও ২১৩ নম্বর বুথের বুথ এজেন্টকে জোর করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।এই অভিযোগ নিয়ে তিনি থানাতেও যান।
অন্যদিকে, মনিগ্রাম পঞ্চায়েতের ১২৩ ও ১২৪ পাশাপাশি দুই বুথে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটারদের খাবার বিলির অভিযোগ তোলেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপিকে ভোট দিলেই দেওয়া হচ্ছে কুপন।আর সেই কুপন দেখালেই মিলছে ঘুগনি-মুড়ি। অন্যদিকে এদিন ৭৮ নম্বর বুথে মহিলাদের হেনস্থা ও লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।
তবে অভিযোগ, পালটা অভিযোগে দিনভর উত্তপ্ত থাকলেও সাগরদিঘির উপনির্বাচন ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি।এদিকে দুপুরেই সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীর চৌধুরী জানান, ‘জয় নিশ্চিত। সাধারণ মানুষ যেভাবে ভোট দিয়েছেন তাতে কংগ্রেস জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছে।’
প্রত্যুত্তরে তৃণমূল প্রার্থী দেবিশস বন্দ্যোাপধ্যায়ের দাবি, ‘অধীর চৌধুরীকে ৩ মার্চ জবাব দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের জোয়ারে ছাপিয়ে গিয়েছে ইভিএম।’ এদিকে আবার বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার জানান, ‘৬৪ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত সাগরদিঘিতে ভোট পড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। ২০২১ এর নির্বাচনের নিরিখে সেক্ষেত্রে আমরাই এগিয়ে রয়েছি।’ তবে কার দাবি সত্য তার জন্য ৩ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছড়া উপায় নেই।