গায়ের জোরে নয়, হাত জোড় করে ভোট চাইতে হবে, বার্তা সাংসদ অর্জুন সিংয়ের

‘গায়ের জোরে নয়, হাত জোড় করে মানুষের কাছে ভোট চাইতে হবে।‘ দত্তপুকুর শিবালয়ে স্থানীয় অটো ইউনিয়নের তরফে একটি বনভোজনের আয়োজনে গিয়ে এমনই বার্তা দিতে দেখা গেল ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে। একইসঙ্গে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সতর্ক করে দিয়ে তাঁর সংযোজন,’জোর করে ভোট নেওয়ার কথাটা ভুলে যেতে হবে। আজ থেকে এই কথা কেউ ভাববেন না। একদম ভাববেন না। ভোট হাত জোড় করে নিতে হয়, জোর করে নয়। দখল করে ভোট জিতলে আমার কিছু বলার নেই।’ এদিনের অনুষ্ঠানে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন অর্জুন। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের শত্রু তৃণমূলই। তৃণমূলের শত্রু আইএসএফ বা বিজেপি নয়।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির ১৮ আসনে জয় তারই প্রতিফলন বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। তাই প্রেক্ষিতে রবিবার দত্তপুকুরে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সতর্ক করেন ব্যারাকপুরে সাংসদ অর্জুন সিং। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিভিন্ন সভা থেকে এই বার্তাই দিতে শোনা গিয়েছে।এবার রবিবার ব্যারাকপুরের সাংসদের মুখেও শোনা গেল সেই একই সুর।

এদিকে অনেক সময় তৃণমূলের পুরনো নেতা-কর্মীরা বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন।তাঁদের দাবি, দল ক্ষমতায় আসার পর নতুন লোকেদের দাপটে তাঁদের আর কেউ গুরুত্ব দেয় না। এমনকী এই অভিযোগ তুলে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন অনেকে। তবে রবিবার দেখা গেল একেবারে উল্টো একটা ছবি। দলের পুরনো কর্মীদের মনজয়ের চেষ্টা করেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। এদিন ব্যারাকপুরের সাংসদ এও বলেন, ‘৯৯ শতাংশ লোক ভাবছেন, প্রার্থী হলেই আমি জিতে যাব। পাঁচ বছর লুটেপুটে খাব। কিন্তু এই জিনিস চলবে না কোনওভাবেই। কে প্রার্থী হবেন, সেটা দল ঠিক করবে।অনেকই মাতব্বরি করেন।আমার বা বিধায়কের পছন্দ না হতে পারে।কিন্তু, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দল করেছেন, দলকে ধরে রেখেছেন অথবা মানুষের ভোট পেয়ে জেতার ক্ষমতা আছে। তাঁদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

এদিনের অনুষ্ঠানে অর্জুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আমডাঙ্গার বিধায়ক রফিকুর রহমান সহ তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব। তবে এই অনুষ্ঠানে  অর্জুনের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পঞ্চায়েত ভোটে দ্বন্দ্ব ও সন্ত্রাসের প্রভাব ২০২৪ সালের লোকসভাতে পড়তে পারে, এই আন্দাজ করে সাংসদ এই বার্তা দিয়েছেন বলে ধরানা বঙ্গ রাজনীতিবিদদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =