ইংরাজি জানেন না পরীক্ষক, যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালত থেকে বহিঃষ্কার বিচারপতির

উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক-ই শুধু নন, ২০১৪ সালের প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ার হয়েও ইংরেজিতে প্রশ্ন শুনে বলেন ‘ইংরেজি জানি না বাংলায় বলব।‘ রুদ্ধদ্বার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে এমনই জবাব দিয়েছিলেন এক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক। যার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হাইকোর্টে এসে ‘গেট আউট’ শুনতে হয় ওই ইন্টারভিউয়ারকে। আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার নিয়োগ মামলা নিয়ে দুর্নীতির শুনানিতে সেদিনের সমস্ত ইন্টারভিউয়ারদের সঙ্গে ওই পরীক্ষককেও দেখা যায়। অন্যান্য়দের মতো তিনিও এদিন এজলাসে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর তাঁকে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি তাঁকে দেখা মাত্রই বলেন,’গেট আউট।’ বিচারপতির একথা শোনার পরেও অবশ্য ওই ইন্টারভিউয়ার এজলাস ছাড়েননি। তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘শেরিফ ডেকে বের করে দেব।‘ এরপরই ওই ইন্টারভিউয়ার এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন রীতিমতো তিরস্কার করে এজলাস থেকে এক ইন্টারভিউয়ারকে বের করে দেওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। শুধু তাই নয়, এরপরই তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, অথচ ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না জেনে ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘এটুকু যোগ্যতা নেই, তিনি কি ইন্টারভিউ নেবেন?’ ফলে তিনি আর স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। কারণ, এদিনই এ ব্যাপারে বোর্ডকে সুপারিশপত্র পাঠাবেন বলেও জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

এরপর ওই ইন্টারভিউয়ার বেরিয়ে যাওয়ার পর এজলাসে উপস্থিত পর্ষদের আইনজীবীকে বিচারপতি ওই ইন্টারভিউয়ার-এর উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘চিনতে পারছেন?’ পর্ষদের সভাপতির অবশ্য ইংরেজিতে কথা বলতে না পারা ওই ইন্টারভিউয়ারকে চিনতে অসুবিধা হয়নি। তিনি সেকথা জানালে বিচারপতি ফের ওই ইন্টারভিউয়ারের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং সেজন্যই তাঁকে এজলাস থেকে বের করে দেওয়া হল বলে জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৪-র টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সংগঠিত হয় সেখানে অনেক ক্ষেত্রে অ্যাপ্টিটিউট টেস্টই নেওয়া হয়নি এবং পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে নম্বর বিতরণ করা হয়েছে বলে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ। তার ভিত্তিতেই গত মঙ্গলবার ইন্টারভিয়ারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন বিচারপতি স্বয়ং।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − two =