ফাটল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দেবালয়ের নাটমণ্ডপে। যার জেরে প্রশ্নের মুখে হাজার বছরের প্রাচীন মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ অর্থাৎ আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই। আদালতের নির্দেশ বর্তমানে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সংস্কার কাজ করছে পুরাতত্ত্ব বিভাগ। তার মধ্যেই ফের মন্দিরের নাটমণ্ডপে ফাটল দেখা দেয় বলে অভিযোগ করেন হেমন্তকুমার পান্ডা। তথ্য জানার অধিকার আইন বা আরটিআই-এর উল্লেখ করে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন তিনি। পাশাপাশি আরটিআই-এর এই কর্মী হেমন্তকুমার পান্ডার দাবি, ‘গত সাত বছরে তিন দফায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সংস্কার কাজ করেছে এএসআই। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রথামবার এই মন্দিরের সংস্কার করা হয়। এর পর ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সংস্কার হয় মন্দিরের।’ এর পরও মন্দিরের মধ্যে ফাটল রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একইসঙ্গে তিনি জানান, ২০২০-তে মন্দিরের সংস্কার কাজ শেষ করে এএসআই। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ফের মন্দিরের নাটমণ্ডপে ফাটল দেখা যায়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের রিপোর্টেও এই ফাটলের উল্লেখ রয়েছে বলেও জানান আরটিআই কর্মী হেমন্তকুমার পান্ডা।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই একাধিক অভিযোগ ওঠে এএসআই -এর বিরুদ্ধে। মন্দিরের সঙ্গে জড়িত সেবায়েতদের একাংশের দাবি, লোক দেখানো সংস্কার কাজ করেছে পুরাতত্ত্ব বিভাগ।এই প্রসঙ্গে পুরী মন্দিরের সেবায়তরা এও জানান, ‘হাজার বছরের বেশি পুরনো এই মন্দিরের নাটমণ্ডপ কতটা সুরক্ষিত, তা আমরা জানি না। এখানে প্রতিদিন প্রচুর পুণ্যার্থী আসেন। তাঁদের সুরক্ষাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭-য় মন্দিরের সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর তাতে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ ওঠে। এই অবস্থায় ওড়িশা হাই কোর্টের তরফে এএসআই-এর ডিরেক্টর জেনারেলকে ২০১৯-র মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেননি পুরতত্ত্ব বিভাগ। ২০২০-তে শেষ হয় সংস্কার কাজ। এদিকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সূত্রে খবর, মন্দিরের নাটমণ্ডপের ফাটল বিপজ্জনক নয়। দ্রুত সেই ফাটল সারিয়ে ফেলা হবে। চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যেই ফাটল বুজিয়ে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে বলে এএসআই সূত্রে খবর। যদিও পুরাতত্ত্ব বিভাগের এই আশ্বাসে সন্দিহান মন্দির কর্তৃপক্ষ। কারণ, যেখানে গত সাত বছরে সংস্কার চালিয়েও মন্দিরের ফাটল মেরামত করা যায়নি। মাত্র দু’মাসের মধ্যে কী ভাবে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।