সুজয়কৃষ্ণ-র বিরুদ্ধে এবার সামনে এল জমি দখলের অভিযোগও

‘কালীঘাটের কাকু’ অর্থাৎ সুজয় ভদ্রর নামে এবার সামনে এল জমি দখলদারির অভিযোগ। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ মামলায় এই মুহূর্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এই সুজয়কৃষ্ণকে প্রথমবার সামনে আনেন গোপাল দলপতি। পরিচয় করান ‘কাকু’ বলে। দাবি করেন, এই ‘কাকু’কে টাকা দিতেন কুন্তল। পরে তাপস মণ্ডল জানান, এই ‘কাকু’র আসল নাম কী। এবার সেই সুজয়কৃষ্ণের নামে অভিযোগ উঠল বেহালার রায় বাহাদুর রোড সংলগ্ন মাঠ দখলদারির।

প্রসঙ্গত, বেহালার নামকরা রায় পরিবার। তাদের নামেই ওই মাঠের পরিচিতি ‘রায়দের মাঠ’। রায় পরিবারের দাবি, তাদের মতামত নিয়েই এই মাঠে টুর্নামেন্ট, দুর্গাপুজো, কালীপুজো করা হতো। এরপর ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হঠাৎই ছন্দপতন হয়। বলপূর্বক এক এনজিও মাঠ দখল করে বলে অভিযোগ তোলে রায় পরিবার। রায় পরিবারের বধূ নীলাঞ্জনা রায় জানান, এনজিওর আড়ালে কলকাঠি নাড়িয়েছেন ওই সংস্থার প্রেসিডেন্ট সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। নীলাঞ্জনা রায়ের আরও দাবি, জমি ফেরাতে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ‘দিদিকে বলো’ অনুষ্ঠানে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জমি বাঁচাতে মামলা এখন আদালতের বিচারাধীন।

নীলাঞ্জনা রায় এই প্রসঙ্গে আরও জানান, ‘আমাদের মাঠের দাগ নম্বর ৯। ওরা যেটাকে বলছে সেটা ৭। কিন্তু ৯টাকে ওরা ৭ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। এটা একটা বিরাট গরমিল। এই জন্য কোর্ট শোকজ করেছিল। কিন্তু শোকজের অর্ডার ওরা আজ অবধি দেয়নি। আমি এবং ছোট জা মিলে ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানাই। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। কোনও ফোন পাইনি। পরে আমরা ফিরহাদ হাকিমের কাছেও যাই। পরবর্তীতে তিনি কোনওরকম সাহায্য করতে পারেননি।‘

এই প্রসঙ্গে স্থানীয় ওই কোচিং ক্লাবের এক প্রশিক্ষকও জানান, ‘সুজয় ভদ্রের অনুগামী ছাড়া যে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন, সকলে বলবেন এটা শৈলেন রায়দের মাঠ। ওনাদের অনুমতিতে সকালে ফুটবল কোচিং ক্যাম্প হতো। যেদিন থেকে মাঠটা দখল করল, সেদিন থেকে আমার কোচিং ক্যাম্পের বাচ্চারা কোথায় কোথায় থাকে খবর নিল। বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে যেন মাঠে ছেলে না পাঠায়।‘ একই সুর স্থানীয় এক বাসিন্দার গলাতেও। তিনি আরও বিস্ফোরক এক অভিযোগ আনেন এই সুজয় ভদ্র এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে। জানান, ‘হঠাৎ-ই এক রাতে কিছু সমাজবিরোধী এসে মিনারেল ওয়াটার দিয়ে পাঁচিল গাঁথে। রাত ১২টায় জল পাবে না। লরি করে জল নিয়ে এসে গাঁথনি করে। সিমেন্ট গোলা হয় মিনারেল ওয়াটারে। আমরা কিন্তু জানি এটা শৈলেন রায়ের মাঠ। এখানে জ্যোতি বসু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলে মিটিং করেছেন। এরপর এই ঘটনা।’

এদিকে ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের দাবি, ‘বাংলার বন্ধু নামে এনজিও আছে। কিন্তু তার কোনও জমি কোথাও দখল করা নেই। আমাদের ভালবেসে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রায় পরিবারের কিছু সদস্য একটা জমি গিফট করে। দখলের প্রশ্ন নেই। গিফট ডিড রয়েছে। জমিতে নোংরা, জঞ্জাল, গাছপালা আছে। সেই জমিতে সামাজিক কাজ হবে।‘ একইসঙ্গে এও জানান, ‘কলকাতার প্রাক্তন মেয়ার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আমি ব্যক্তিগত বলেছিলাম, বেহালায় এত পার্কিংয়ের সমস্যা, আপনি একটা পার্কিং লট করুন। আমি জমিটা দিচ্ছি। আমি জমিটা গিফট পেয়েছি ভাল কাজের জন্য।‘ একইসঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের আরও দাবি, ওখানে পয়সা নিয়ে ফুটবলের কোচিং হতো। কমার্শিয়াল ওটা। পাড়ার ছেলেরা ফুটবল খেলত না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =