নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার নাম জড়াল টলিউডেরও, গ্রেপ্তার শাহিদ ইমাম

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতমধ্যেই সিবিআই-এর জালে ‘সৎ রঞ্জন’ ওরফে চন্দন মণ্ডল। এই চন্দনের সূত্র ধরেই এই নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে এবার গ্রেপ্তার করা হল হুগলি জেলার প্রাক্তন যুব তৃণমূল সম্পাদক শাহিদ ইমামকেও। ধৃত শাহিদ ইমাম হুগলি জেলার আরামবাগের বাসিন্দা। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, এই হুগলিতেই চোখধাঁধানো দু’টি বাড়ি রয়েছে তাঁর। গোটা বাড়িতে চার থেকে পাঁচটি এসি বসানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি নির্মীয়মাণ। এলাকাবাসীর দাবি, ওই বাড়িদুটি শাহিদের। একইসঙ্গে এ অভিযোগও উঠছে, প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে চাকুরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছে শাহিদ ইমাম। তবে রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগটুকুই শুধু শাহিদের পরিচিতি নয়, তিনি বাংলা সিনেমার নায়ক ও প্রযোজকও। ‘শ্লীলতাহানি’, ‘আমার চ্যালেঞ্জ’, ‘বিষাক্ত মানুষ’ নামে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। একইসঙ্গে ‘সোনা বন্ধু’ নামক একটি গানের অ্যালবামেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। আর এখানেই বিরোধীদের একাংশের তরফ থেকে প্রশ্ন উঠেছে, চাকরি বিক্রির কোটি কোটি টাকা কি শাহিদ সিনেমা তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে কি না তা নিয়েও।

স্থানীয় সূত্রে খবর, আরামবাগ পুরসভায় বাঁধপাড়ায় বাড়ি শাহিদের। শনিবার শাহিদদের এই বাড়িতে অবশ্য কাউকেই পাওযা যায়নি। দরজায় ঝুলছে তালা। কোনও লোকজন নেই। এই বিষয়ে শাহিদ ইমামের প্রতিবেশীরা জানান, শনিবার সকালে তাঁরা খবর পেয়েছেন, সিবিআই ওকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি তাঁরা এও জানান, প্রতিবেশী হিসেবে ওকে কখনও কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখিনি। এই জায়গাটা বন্যাকবলিত। বন্যার সময় সাহায্যও করেছে এলাকাবাসীকে। এই বাড়িতেই ওর স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা থাকতেন।

এদিকে সূত্রে আরও খবর মিলছে যে, , ধৃত শাহিদ ইমাম ২০১৭ সালে হুগলি জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাবা হাসান ইমাম পেশায় স্কুল শিক্ষক। ২০০১ সালে আরামবাগ বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। পরে জাতীয় কংগ্রেসের হয়ে লোকসভার প্রার্থী হন তিনি। শাহিদ কেবল টলিউডে নায়ক নন, হাওড়ার উদনারায়নপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকও ছিলেন। তাঁর এই গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গে আরামবাগ তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি পলাশ রায় জানান, ‘কেউ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে আইন আইনের পথে চলবে। কিন্তু, BJP সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে অনেককে গ্রেফতার করছে। এই ধরনের নোংরা রাজনীতি থেতে তারা বিরত থাকুক এমনটাই চাইছি।’ এদিকে এই ঘটনায় আরামবাগের প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণ চন্দ্র সাঁতরা জানান, ‘সিবিআই ঠিক কি কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে তা তাঁর জানা নেই। তবে প্রকৃত যদি অপরাধী হয় তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। প্রকৃত সত্য উদঘাটন হোক।‘ অন্যদিকে, পুড়শুড়ার বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির সম্পাদক বিমান ঘোষ জানান, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত চলছে। এখানে কোন রাজনৈতিক চক্রান্ত নেই। একের পর এক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বড় বড় নেতা মন্ত্রী গ্রেফতার হচ্ছেন। বহু চাকরি বাতিল হচ্ছে। সবকিছুর জন্য দায়ী তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + one =