চাকরির আশায় এবার শিবরাত্রি ব্রত পালন করলেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। শনিবার এমনই এক অভিনব উপায়ে আন্দোলন নজরে আসে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে। এদিকে শুক্রবারই চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার পর আন্দোলনকারীরা জানান, চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই উচ্চ প্রাথমিকের বিস্তারিত বিষয় হাই কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হবে এসএসসির তরফে।
এদিকে উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা চাকরির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে। যদিও হাইকোর্টে দেওয়া হলফনামায় একাধিক তত্ত্ব থাকবে বলেই এসএসসি তরফে জানানো হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। তাই আপাতত হাইকোর্টের হলফ নেওয়ার দিকেই তাকিয়ে এসএসসি উচ্চপ্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিকে স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রের খবর এই হলফনামায় একদিকে যেমন উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ওএমআর শিট যাচাই পর্বতে কী কী অসঙ্গতি ধরা পড়েছে তা যেমন হলফনামা আকারে জানাতে চলেছে এসএসসি। একইসঙ্গে জানানো হবে এর জেরে মেধা তালিকায় কী পরিবর্তন হতে চলেছে। কমিশনের আধিকারিকরা মনে করছেন এর ফলে আরও কিছু চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসএসসির কাছে গোটা রিপোর্টও চলে এসেছে। তাই আগামী সপ্তাহে হলফনামা দিয়ে জানানোর পর হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেয় সেই দিকেই তাকিয়ে থাকবে আপাতত স্কুল সার্ভিস কমিশন। অন্যদিকে এই উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের জন্য এসএসসি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করেছিল। সেই তদন্তেও উঠে আসে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর উচ্চপ্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা বাড়াল বলেই মনে করছেন শিক্ষামহলের সঙ্গে যুক্ত অনেকই।
এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের জেরে স্কুল সার্ভিস কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এসএসসি তরফে নেওয়া টেটের ওএমআর শিট যাচাই করা হবে। এখনও পর্যন্ত এসএসসি তরফে দুটি টেট নেওয়া হয়েছে। ২০১১-১২ এবং ২০১৫ সাল এই দুবার টেট নেওয়া হয়েছে এসএসসি-র তরফে। আর সেই যাচাই পর্বতেই একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। কমিশন সূত্রে খবর ২০১৫ তে নেওয়া এসএসসি টেটে ওএমআর শিটে নম্বর নিয়ে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। আর এই অসঙ্গতি ধরা পড়ে যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে, সেই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকেই। আর তা ধরা পড়ছে ওএমআর শিটের নম্বরেই। যদিও ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আগেই সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছিলেন “আমাদের তরফে ওএমআর শিটের যাচাই পর্বের কাজ চলছিল বলেই উচ্চপ্রাথমিকের প্যানেল হাইকোর্টে পেশ করতে সময় লাগছিল। সেই যাচাই পর্ব ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে প্রায়। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি আমরা হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দেব। হলফনামাতেই আমরা যা জানানোর জানাব।” গত ৮ বছর ধরে চলছে এসএসসি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া। ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্য পদ রয়েছে এই নিয়োগের জন্য। তবে এসএসসির যাচাই পর্বে ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি তথ্য উঠে আসায় এই নিয়োগে নতুন করে কোন জটিলতা তৈরি হবে না তো? এমনটাই এবার আশঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের।