আর মাঝে একটা দিন। এরপরই ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিজেপির আসন সংখ্যা আরও বাড়াবে বলেই আত্মবিশ্বাসী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আসন সংখ্যাতেই সীমিত থাকবে না, বাড়বে ভোট শতাংশও, এমনটাও দাবি করছেন শাহ।এই দাবির পিছনে যে কারণ তিনি দেখাচ্ছেন তা হল, ‘যে কংগ্রেসের বহু কর্মী অতীতে বাম শাসনকালে খুন হয়েছিলেন, সেই কংগ্রেসই অল্প কিছু আসনের জন্য বামপন্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করছে। আর যে বামপন্থীরা ত্রিপুরায় কখনও কোনও দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেনি, সেই বামপন্থীরাও এবার কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পথে গিয়েছে। অর্থাৎ, তারা বুঝিয়ে গিয়েছে তারা এককভাবে বিজেপিকে হারাতে পারবে না।’ আর এটাই বিজেপির জন্য ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন অমিত শাহ।
এরই পাশাপাশি কংগ্রেস-সিপিএম-এর এই আসন সমঝোতা বিজেপির জন্য কোনওভাবে চ্যালেঞ্জ হবে না বলেই অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, এতে বিজেপির আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। বললেন, ‘আমরা এত শক্তিশালী হয়ে গিয়েছি, যে কেউ একা একা আমাদের বিরুদ্ধে লড়তে চাইছে না।’ উল্টে কংগ্রেস-সিপিএম-এর জোটকে বাড়তি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টে গত পাঁচ বছরে বিজেপি যে যে কাজ করেছে, সেগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপরেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন অমিত শাহ।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, পাঁচ বছরের মধ্যে ফুল টার্ম মুখ্যমন্ত্রী পায়নি ত্রিপুরা। প্রথমে বিপ্লব দেব। পরে তাঁকে সরিয়ে মানিক সাহা। ফলে এ প্রশ্নও উঠেছে, তাহলে কি ত্রিপুরার রাজনীতি দিল্লি থেকে চালিত হয়? এমন প্রশ্ন এর আগেও একাধিকবার উঠে এসেছে। এই প্রসঙ্গে অমিত শাহ জানান, ‘পার্টির একটি সিস্টেম রয়েছে। কাউকে কন্ট্রোল করার জন্য বদল করা হয় না। বরং, কোনও নেতাকে যাতে আরও বেশি করে মানুষের সেবায় ব্যবহার করা যায়, সেই কারণে বদল করা হয়। আজ বিপ্লব দেবকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হয়েছে। হরিয়াণার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি একইসঙ্গে দিল্লির রাজনীতিতে এবং ত্রিপুরার রাজনীতিতে কাজ করছেন।’অর্থাৎ, বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে যে জাতীয় রাজনীতিতে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে, তা এদিন স্পষ্ট করেন বিজেপির চাণক্য।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ‘চলো পাল্টাই’ স্লোগান তুলেছিল। ত্রিপুরার রাজনৈতিক পালাবদলে সেই স্লোগান অনুঘটকে মতো কাজ করেছিল বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। দীর্ঘদিনের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরায় পদ্ম ফুটেছে। তৈরি হয়েছে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বললেন, ‘আমরা সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী বদলানোর জন্য চলো পাল্টাই বলিনি। আমরা ত্রিপুরার সামগ্রিক অবস্থা বদলানোর জন্য চলো পাল্টাই স্লোগান তুলেছিলাম।’ অমিত শাহর বিশ্বাস, বিজেপি সেই পরিস্থিতির বদল করতে পেরেছে।