এলিট সিনেমা হলে জুতোর শোরুমে আপত্তি লালবাজারের

এলিট সিনেমা হলে জুতোর শোরুম খোলার প্রস্তাব আপাত খারিজ কলকাতা পুলিশের। প্রসঙ্গেত, বহুকাল আগেই বন্ধ হয়েছে ধর্মতলার ঐতিহ্যবাহী এলিট সিনেমা হল। এবার সেই বন্ধ বিল্ডিংয়ে একটি নামকরা জুতো প্রস্তুককারক সংস্থার শোরুম খোলার জন্যে কলকাতা পুরসভায় প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়। তবে তা নিয়ে আপত্তি তুলল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এলিট সিনেমা হলে জুতোর এই শোরুম চালু হলে ব্যস্ত এসএন ব্যানার্জি রোডে গাড়ি চলাচলে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই আবার নতুন করে নকশা জমা দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

প্রসহ্গত, দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর আগে ১৯৪০-র ২ অগাস্ট এই এলিট সিনেমা চালু হয়। এক সময় এর মালিক ছিল টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স এবং বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড কোম্পানি। শুরুতে এখানে বলরুম ড্যান্স ক্লাব ছিল। পরে সেটা সিনেমা হলে পরিবর্তিত হয়। সিনেমা প্রদর্শনের জন্যে বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতিও আনা হয়েছিল এক সময়ে। বলিউড ও হলিউডের বহু বিখ্যাত সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে এলিটে। এখানেই একটানা চার বছর চলেছিল ‘শোলে’। তার সবক’টি শো’ই ছিল হাউসফুল। এই হলেই শহরের দর্শকরা প্রথম থ্রি-ডি সিনেমা দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। দর্শকাসন ছিল ২২২৮টি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় একটা সময়ের পর হলটি লোকসানে চলতে শুরু করে। বিপুল আর্থিক লোকসানের কারণে শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৩৬ কোটি টাকায় এলিট সিনেমা হল কিনে নেয় নামকরা জুতো প্রস্তুতকারক সংস্থা। ধর্মতলা চত্বরে তাদের জুতোর বিশাল শোরুম রয়েছে। একইসঙ্গে এলিট সিনেমা হল সংস্কার করে আরও একটি শোরুম খুলতে চাইছে তারা। সেই মতো পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে তারা নকশা জমা দিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এলিট সিনেমা হলে মোট তিনটি তলা। উচ্চতা ১৭.৪ মিটার। ফ্লোর এরিয়া ২৮৩০ বর্গমিটার। পুরনো যে সিনেমা হল ছিল, সেটাকেই কিছুটা অবদলবদল করে জুতোর শোরুম তৈরি করার এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে খবর।

পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানান, কলকাতা শহরে যে কোনও বড় নির্মাণের ক্ষেত্রে মিউনিসিপ্যাল বিল্ডিং কমিটি থেকে নকশা পাশ করাতে হয়। সেখানে কলকাতা পুরসভার ইঞ্জনিয়াররা ছাড়াও কলকাতা পুলিশ, দমকল এবং পরিবেশ দপ্তরের আধিকারিকরা থাকেন। এলিট সিনেমা হলের একদম গা ঘেঁষে গিয়েছে এসএন ব্যানার্জি রোড। এটি শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। ধর্মতলায় যত মিছিল হয়, এই রাস্তা দিয়েই যায়। পাশে কোনও বড় জুতোর শোরুম খুললে যানবাহনের গতি থমকে যাবে। তার জন্যে বিকল্প রাস্তা বের করতে বলেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − seven =