‘আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা সরকারি কর্মচারিরা ভোটকর্মীর দায়িত্ব বয়কট করব। সমস্ত সরকারি কর্মচারিই ভোটের কাজ বয়কট করব।‘ মঙ্গলবার এমনই বার্তা দিতে শোনা যায় সরকারি কর্মচারি এবং পেনশনারদের ৩৩টি সংগঠনের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফ থেকে। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নিয়ে সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চেষ্টা করছেন সরকারি কর্মচারিরা, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের গরিষ্ঠ অংশ। এদিকে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে দীর্ঘদিন ধরে ধরনায় বসার মাঝে সোমবার ভোরবাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে কর্মরত সঞ্জিত চক্রবর্তী এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য। দু’জনকেই রাতে এসএসকেএম-এ ভর্তি করা হয়। এরপর সঞ্জিতের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে, অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্যকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এরপরই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফ থেকে ফের হুঁশিয়ারি, ‘আমরা আন্দোলন আর তীব্র করে তুলব।‘ আর এরই রেশ ধরে উঠে আসে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটকর্মীর দায়িত্ব বয়কট করার।
এদিকে সোমবারই ডিএ-র দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন রাজ্য সরকারি কর্মচারি এবং পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। রাজ্যের প্রতিটি সরকারি দফতরের বাইরে ডিএ-র দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন আন্দোলনকারীরা। সরকারকে কার্যত আলটিমেটাম দিয়েছেন তাঁরা। আগামীদিনে বকেয়া ডিএ না মেটানো হলে, সে ক্ষেত্রে আরও বড় আন্দোলন কিংবা লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। একইসঙ্গে সরকারি কর্মচারি এবং পেনশনারদের ৩৩টি সংগঠনের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফ থেকে হুঁশিয়ারি ‘দ্রুত কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা অর্থাৎ ডিএ না মেটানো হলে আন্দোলন আরও বাড়বে। আগামীদিনে এই আন্দোলন একটা ভয়ংকর আকার নিতে চলেছে। এবার আবার লাগাতার কর্মবিরতি এবং ধর্মঘটের পথে হাঁটব। সরকারের কাছে সমস্ত কর্মচারিরা একজোট হয়ে এই কড়া বার্তাটা আজকে পৌঁছে দিতে চাইছে।’ এদিকে সূত্রে খবর, মার্চ মাসে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের এই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত সংক্রান্ত বিষয় ও তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার কথাও ভাবনাচিন্তা করছেন আন্দোলনকারীরা। প্রয়োজনে তাঁরা নবান্ন অভিযানেরও ডাক দিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। দ্রুত আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন আন্দোলনকারীরা।